Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রায় শুনেই ছুট মন্দির, মাজারে

সাতসকালেই মাড়গ্রাম হাতিবাঁধা মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে টিভি চালিয়ে বসে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মীরা

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০০:৪০
Share: Save:

আর ভোট হবে না — হাওয়ার বেগে ছড়াল খবরটা। আশাপূরণের আনন্দে কেউ পুজো দিতে ছুটলেন তারাপীঠে, কেউ গেলেন মাজারে। এ সবের দোসর আবির খেলা, মিষ্টিমুখ তো আছেই।

সাতসকালেই মাড়গ্রাম হাতিবাঁধা মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে টিভি চালিয়ে বসে গিয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মীরা। হাজিরাও ছিল অন্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ। টিভিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা শোনামাত্র অনুগামীরা আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন। অতি উচ্ছ্বাসে মাড়গ্রাম ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কেউ কেউ রাস্তায় নাচতেও শুরু করেন। রামপুরহাট ২ ব্লক তৃণমূল কমিটির সদস্য তথা রামপুরহাট ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দৌলতুন্নেসা নুরির স্বামী খন্দেকর মহম্মদ সফিকে জড়িয়ে ধরে মাড়গ্রাম ২ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান হীরালাল দাস জানিয়ে দিলেন, এমন খুশির দিনে এখানে উপস্থিত যত আছেন সকলকে তো বটেই, পথচারীদেরও মিষ্টি মুখ করাবেন। তা শুনে হাতিবাঁধা মোড়ের মিষ্টির দোকানে ছুটলেন কেউ।

শুধু মাড়গ্রাম নয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই এখন উৎসবের আবহ। বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রত্যেক প্রার্থীই তো সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় জিতে গিয়েছেন। তবে খুশির বহর বেশি বীরভূমেই। রাজ্যের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনটি স্তরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এ জেলাতেই। সে কথা মেনেও নিলেন রামপুরহাট ২ ব্লকের বশোয়া গ্রামের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর চট্টোপাধ্যায়। পেশায় তারাপীঠ মন্দিরের সেবাইত। বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বশোয়া থেকে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় জয়ী হয়েছেন। প্রতিদিনের মতো সকালেই মন্দিরে এসেছিলেন। শ্যামসুন্দরের কথায়, ‘‘মা তারার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম রায়ে যাতে বিড়ম্বনা না বাড়ে।’’ ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তারাপীঠ এলাকায় তৃণমূল পরাজিত হয়েছিল কংগ্রেসের কাছে। এ বছর বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী সুমনা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর স্বামীও রায় বেরোতে তারাপীঠে পুজো দেন।

রায় বেরোতেই নলহাটি ২ ব্লকে আবির খেলায় মেতে ওঠেন দলের কর্মীদের একাংশ। এলাকার নির্বাচিত সদস্যদের কেউ কেউ মাজারে প্রার্থনা করতে ছোটেন। দলের ভদ্রপুর ২ অঞ্চলের সভাপতি আব্দুর রহমান জানালেন, এক সময়ের কংগ্রেস ও সিপিএম-এর দুর্গ বলে পরিচিত নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি এ বার প্রথম তৃণমূল দখল করল। এলাকার ছ’টি পঞ্চায়েতও তৃণমূলের দখলে। সেই আনন্দেই উড়ল আবির। দলের কার্যকরী ব্লক সভাপতি সামসুল হোদা কর্মীদের দেদার মিষ্টিমুখ করিয়েছেন।

মল্লারপুর থেকে মহম্মদবাজার, বোলপুর থেকে মুরারই— সর্বত্রই ছিল খুশির ছবি। দেদার চলেছে মিষ্টিমুখ, আবির খেলা। দলের জেলা সহ সভাপতি আসগার আলি জানিয়ে দিয়েছেন, জয়ের খুশিতে আগামী বুধবার মুরারই থানার বনরামপুরে বেরিলি শরিফ মুফতি আখতার রাজা খানের স্মরণে এলাকার মানুষকে খাওয়ানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Panchayat Supreme Court Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE