Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Crime

খুন করে অজয় সে রাত কাটায় শহরেই

গত ১৭ জানুয়ারির পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার বাসিন্দা অরূপবাবুকে তাঁরই বাড়িতে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।

শিক্ষক অরূপ চট্টরাজের স্ত্রী পাপড়িদেবী ও অজয় অম্বানি।—ফাইল চিত্র।

শিক্ষক অরূপ চট্টরাজের স্ত্রী পাপড়িদেবী ও অজয় অম্বানি।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ০০:১৩
Share: Save:

পুরুলিয়ার কলেজ শিক্ষক অরূপ চট্টরাজ খুনে ধৃত মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা অজয় অম্বানি খুনের আগে ঘাঁটি গেড়েছিলেন পুরুলিয়া শহরে। সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। খুন করার পরে অজয় ফিরে যান সেই বাড়িতে। সেখানে রাত কাটিয়ে পর দিন রাঁচি চলে যান। পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছে তারা।

গত ১৭ জানুয়ারির পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার বাসিন্দা অরূপবাবুকে তাঁরই বাড়িতে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরের বাসিন্দা অজয় এবং নিহতের স্ত্রী পাপড়ি বিশ্বাস চট্টরাজকে। পুলিশের দাবি, পাপড়িদেবী এবং তাঁর ‘প্রেমিক’ অজয় ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন। সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় অরূপবাবুকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। ঘটনার দিন রাত ৮টা নাগাদ অজয়কে সকলের অলক্ষে তাঁদের বাড়িতে ঢোকান পাপড়িদেবী।

আদালতের নির্দেশে ধৃতেরা এখন পুরুলিয়া সংশোধনাগারে। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, অজয়কে জেরা করে তারা জেনেছে, গত বছর দুর্গাপুজোর আগে পুরুলিয়া শহরে একটি ঘর ভাড়া নেন তিনি। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় অজয় এবং পাপড়ি নিজেদের ‘স্বামী-স্ত্রী’ বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। পুলিশকে এই তথ্য জানিয়েছেন ওই বাড়ির মালিক। তাঁকে ধৃতদের ছবি দেখানো হয়েছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, মাঝেমধ্যেই ওই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন অজয়। পাপড়িদেবীও মাঝেমধ্যে সেখানে যেতেন। সেখানেই অরূপবাবুকে খুনের ছক কষা হয়েছিল বলে পুলিশের দাবি।

খুনের তদন্তে নেমে আরও কিছু তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। পুলিশ সূত্রের দাবি, অরূপবাবুর ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ব্যাগ। সেই ব্যাগে ছিল একজোড়া গ্লাভস। খুনের সময় আততায়ী সেই গ্লাভস ব্যবহার করেছিল কি না, তা জানতে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করবে পুলিশ। ঘটনার পুনর্নির্মাণও করতে পারে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের দাবি, তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পেরেছেন, আততায়ী অরূপবাবুর উপরে হামলা চালানোর পরে তিনি ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করেন। তা শুনে পাপড়িদেবী তাঁর স্বামীর ঘরে যাননি। এমনকি, তিনি তাঁর শ্বাশুড়িকেও সেই ঘরে যেতে বাধা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

প্রায় বছর কুড়ি আগে অজয়ের বাবা কর্মসূত্রে থাকতেন ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার সুদামডিতে। তখন অজয় পুরুলিয়ার একটি কলেজে পড়তেন। পুলিশের দাবি, সেখানেই পাপড়িদেবীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে কলেজ জীবন শেষ হলে সে সম্পর্কে যবনিকা পড়ে। বছর আড়াই আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ফের তাঁদের যোগাযোগ হয়। নতুন করে সম্পর্ক তৈরি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE