Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ঝালদা পুরসভার অনাস্থা-কাণ্ড

নয়ছয়ের অভিযোগ দু’পক্ষেরই

বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালের পাল্টা অভিযোগ, মধুসূদন ক্ষমতায় থাকাকালীন টাকা নয়ছয় হয়েছে। তিনিও সেই ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত করা হবে।’’

জেলাশাসকদের দফতরে কাউন্সিলররা। নিজস্ব চিত্র

জেলাশাসকদের দফতরে কাউন্সিলররা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

জল গড়াল জেলাশাসকের দফতর পর্যন্ত। সোমবার ঝালদার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা কাউন্সিলররা জেলাশাসকের দ্বারস্থ হলেন। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে মোট ৯টি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা।

অভিযোগকারী কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা মধুসূদন কয়াল। বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালের পাল্টা অভিযোগ, মধুসূদন ক্ষমতায় থাকাকালীন টাকা নয়ছয় হয়েছে। তিনিও সেই ব্যাপারে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘দু’টি অভিযোগেরই তদন্ত করা হবে।’’

কী অভিযোগ ওই কাউন্সিলরদের?

২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ঝালদায় এসেছিলেন। অভিযোগ, তখন কোনও টেন্ডার না করেই পুরপ্রধান একশোটি ত্রিফলা আলো কেনেন। এই ব্যাপারে সোমবার সুরেশ বলেন, ‘‘টেন্ডার করার মতো সময় ছিল না। তবে পরে বোর্ডের বৈঠকে পাশ করিয়ে নিয়েছিলাম।’’

সুবর্ণরেখা জল প্রকল্পের জন্য নানা পরীক্ষার খরচ বাবদ পুরসভার তহবিল থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ওই কাউন্সিলররা। তাঁদের অভিযোগ, এই টাকা নয়ছয় হয়েছে। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুরপ্রধান দাবি করেছেন, যে সংস্থা কাজ করেছে তাদের এমইডির অনুমোদন রয়েছে।

এগজিকিউটিভ অফিসারের সই জাল করা, পক্ষপাত করে ঝালদার কালী পাহাড়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ ঠিকা সংস্থাকে পাইয়ে দেওয়া, ই-টেন্ডার না করা, টেন্ডারের বিজ্ঞাপন না দেওয়া, সংস্কারে নামে শৌচাগার ভেঙে ফেলা— এমন নানা অভিযোগও তুলেছেন ওই কাউন্সিলররা। ঝালদা পুরসভার বিরোধী দলনেতা মধুসূদন কয়াল বলেন, ‘‘তদন্তের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রমাণ-সহ অভিযোগ জেলাশাসকের হাতে তুলে দিলাম। তিনি আমাদের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।’’ শাসকদলের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের শহর কমিটির কার্যকরী সভাপতি প্রদীপ কর্মকারও এ দিন অভিযোগকারী দলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূলেরই সৈনিক। কিন্তু দুর্নীতিমুক্ত পুরসভা চাই। ঝালদাকে স্বচ্ছ পুর-প্রশাসন দিতে চাই।’’

এ দিকে, বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘যাঁরা আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করতে গিয়েছেন তাঁরা নিজেরাই দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, মধুসূদন পুরপ্রধানের দায়িত্বে থাকার সময়ে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৯৯টি বাড়ির সংস্কারের টাকা নয়ছয় হয়েছে। বেশ কিছু বাড়ি নাকি তৈরিই হয়নি।

সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মধুসূদন। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত হোক। যদি আমরা দোষী প্রমাণিত হই তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিক প্রশাসন। আর পুরপ্রধান দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘আমার কাছে ঝালদার কয়েক জন কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কয়েক দফা অভিযোগ জানিয়েছেন। পুরপ্রধানও আমার কাছে কয়েক দিন আগে ওঁদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেছেন। দু’পক্ষের অভিযোগই তদন্ত করে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Finalcial Corruption ঝালদা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE