Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ

অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রীটির মা বিষ্ণুপুর শহরের ওই স্কুলেরই শিক্ষিকা। তিনি পুলিশ কর্তা থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
 বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:১০
Share: Save:

পরীক্ষার মধ্যে ছাত্রীকে নিজের অফিসে ডেকে শ্লীলতাহানি করে তা গোপন রাখার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রধানশিক্ষক এবং স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছাত্রীটির মা বিষ্ণুপুর শহরের ওই স্কুলেরই শিক্ষিকা। তিনি পুলিশ কর্তা থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগকারিণী শিক্ষিকার বিরুদ্ধেই উল্টে মেয়ের পরীক্ষার খাতায় কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন প্রধানশিক্ষক ও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি।

পুলিশ জানিয়েছে, বিষ্ণুপুর থানায় গত শনিবার পকসো আইনে শ্লীলতাহানি ও হুমকি দেওয়ার মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার বিষ্ণুপুরের বিশেষ আদালতে অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতের বিচারক ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে। কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’’

বাংলা বিষয়ের শিক্ষিকা ওই ছাত্রীর মা জানান, ১২ ডিসেম্বর তিনি ছুটি নিয়ে মেয়েকে স্কুলে মৌখিক পরীক্ষা দেওয়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মেয়েকে প্রধানশিক্ষক ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিছু পরে মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রধানশিক্ষকের অফিস ঘর থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে জানায়, প্রধানশিক্ষক ও স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মোবাইলে আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে তাকে শ্লীলতাহানি করেছে। বাইরে জানালে তাকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।’’ তাঁর দাবি, মেয়ে জানিয়েছে, আগেও তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। কিন্তু, ভয়ে গোপন রেখেছিল। ওই শিক্ষিকার আরও অভিযোগ, তিনি সঙ্গে সঙ্গে প্রধানশিক্ষকের অফিস ঘরে ঢুকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে দু’জনে তাঁকে দুর্গম জায়গায় বদলি করা ও মেয়ের ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তিনি জানান, ১৩ ডিসেম্বর তিনি বাঁকুড়ায় পুলিশ সুপার, স্কুল শিক্ষা দফতর এবং জেলা চাইল্ডলাইন ও বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ জানান।

মঙ্গলবার প্রধানশিক্ষক পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘আগে স্কুলে প্রশ্নপত্র তৈরি হত বলে, আগাম কিছু প্রশ্ন জেনে মেয়েকে তৈরি করে পাঠাতেন ওই শিক্ষিকা। এ বার প্রশ্ন কেনা হয়েছে। পরীক্ষার পরে মেয়ের খাতা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে উত্তর লিখে নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করেন ওই শিক্ষিকা। তাই আগাম মোবাইলে মেয়েটির সংস্কৃতের উত্তরপত্রের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে রেখেছিলাম। সে দিন ছাত্রীটিকে ডেকে ওর জমা দেওয়া উত্তরপত্রের ছবি ও পরে বদলে যাওয়া উত্তরপত্র তাকে দেখিয়েছিলাম। খারাপ আচরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’

সভাপতি দাবি করেন, ‘‘প্রধানশিক্ষক যখন ছাত্রীটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন, তখন তার মা তথা ওই শিক্ষিকা বার বার অফিসে ঢুকে পরছিলেন। তাঁকে আমি বারণ করায় তিনি উল্টে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি নিজেকে বাঁচাতে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করেন।’’

ওই স্কুলের বিশাখা কমিটির সদস্য এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ছাত্রীর মা-ও স্কুলের বিশাখা কমিটিতে রয়েছেন। ঘটনার কথা তিনিও কোনও দিন কমিটিকে জানননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Molestation Bishnupur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE