Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অন্ধকারে লুকিয়ে পড়ল দাঁতাল

সোমবার পুঞ্চার বারঘুটু গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে কাঠ কু়ড়োতে গিয়ে বারাবনি গ্রামের বৃদ্ধা ফুলমণি মান্ডি দাঁতালটির সামনে পড়ে গিয়েছিলেন। শুড়ে পেঁচিয়ে বৃদ্ধাকে পায়ে পিষে ফেলে হাতিটি।

হুলা পার্টির প্রস্তুতি। মানবাজার রেঞ্জ অফিসে। —নিজস্ব চিত্র।

হুলা পার্টির প্রস্তুতি। মানবাজার রেঞ্জ অফিসে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৮ ০১:২৪
Share: Save:

হুলা পার্টির লোকজন মশাল জ্বালিয়ে চলেছিলেন পিছনে। সোমবার সন্ধ্যায় পুঞ্চার বারঘুটু জঙ্গল থেকে শুরু হয়েছিল অভিযান। আশা ছিল, ভোরের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে দাঁতালটিকে। কিন্তু তাতে জল ঢেলে কয়েক কিলোমিটার গিয়েই অন্ধকারে চোখের আড়াল হয়ে গেল হাতিটি। এলাকার সমস্ত জঙ্গল চষে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত আর তার কোনও সন্ধান মেলেনি। বন দফতর মানবাজার ১, মানবাজার ২ এবং পুঞ্চা ব্লক এলাকায় মাইক নিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করে ফিরেছে।

সোমবার পুঞ্চার বারঘুটু গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে কাঠ কু়ড়োতে গিয়ে বারাবনি গ্রামের বৃদ্ধা ফুলমণি মান্ডি দাঁতালটির সামনে পড়ে গিয়েছিলেন। শুড়ে পেঁচিয়ে বৃদ্ধাকে পায়ে পিষে ফেলে হাতিটি। বেলা ১১টা নাগাদ খবর এলেও পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা দেহ উদ্ধার করতে পারছিলেন না। কাছাকাছি গেলেই তেড়ে আসছিল হাতিটি। বিকেল ৫টা পাঁচটা নাগাদ শেষ পর্যন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত হয়েছে।

যে ভাবে বৃদ্ধার দেহ ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে, তা দেখে বনকর্মীদের একাংশ অনুমান, হাতিটি কোনও কারণে খুবই উগ্র হয়ে রয়েছে। মঙ্গলবারও বন দফতরের কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়েছেন। কিন্তু কোথা থেকে দলছুট দাঁতালটি এলাকায় ঢুকেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেননি।

সোমবার সন্ধ্যায় বারঘুটুর জঙ্গল থেকে বন দফতরের কর্মীরা দাঁতালটিকে নির্দিষ্ট পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুঞ্চার পোড়াডি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল পার হওয়ার পরে হঠাৎ হাতিটি আড়ালে চলে যায়। রাতভর খোঁজ মেলেনি। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ মানবাজার ১ রেঞ্জ অফিসে খবর আসে, ভোরে জিতুঝুড়ি গ্রামের কাছে মানবাজার থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার রাস্তায় এক ম্যাটাডর চালক দাঁতালটিকে রাস্তা পেরোতে দেখেছেন। জিতুঝুড়ি গ্রামের কাছে কাতলাগোড়ার জঙ্গল বেশ ঘন। দাঁতাল সেখানে ঘাপটি মেরে থাকতে পারে ভেবে সবাই যান। কিন্তু হাতির দেখা মেলেনি। দুপুরে আবার সূত্র পেয়ে দোলাডাঙা বনাঞ্চলের দিকে গিয়েছিলেন বনকর্মীরা। লাভ হয়নি।

মানবাজার ২ রেঞ্জ আধিকারিক রোহন সিংহ মানবাজার ১ রেঞ্জের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দাঁতালটি মাঝারি আকারের। সাধারণত এলাকায় হাতির দল ঢুকলে পাশের রেঞ্জ থেকে আগাম খবর আসে। এই দাঁতালটির আগাম কোনও খবরই ছিল না।’’ ফলে কোথা থেকে দাঁতাল এসেছে, তা নিয়ে ধন্দে তাঁরা। তবে বন দফতরের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের গিরিডি বনাঞ্চলে ২৪টি হাতি রয়েছে। দাঁতালটি ওই দলের হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁদের কেউ কেউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Hide Darkness
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE