Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জেলায় প্রতিবাদ চলছেই, পথে নেমে দুর্ভোগ

রবিবার সকালে নলহাটিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। বিকেলে জাতীয় সড়কের কাঁটাগড়িয়া মোড়ে টায়ার ও একটি ভাঙা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে অবরোধ শুরু হয়।

লোহাপুর স্টেশনে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

লোহাপুর স্টেশনে চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
বীরভূম শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৪
Share: Save:

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে জেলার নানা প্রান্তে বিক্ষোভ মিছিল, স্টেশনে তাণ্ডব থেকে অবরোধ চলছেই। জেলার বিভিন্ন ব্লকে মিছিল করেছে তৃণমূলও। জাতীয় সড়ক দীর্ঘ সময় অবরুদ্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হন অনেকে।

রবিবার সকালে নলহাটিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। বিকেলে জাতীয় সড়কের কাঁটাগড়িয়া মোড়ে টায়ার ও একটি ভাঙা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে অবরোধ শুরু হয়। মিছিল থেকে কিছু বিক্ষোভকারী গিয়ে লোহাপুর স্টেশনের রেলগেট ভেঙে দেয়। গেটম্যানের ঘরে আগুন ধরিয়ে স্টেশনে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ভাঙা হয় ফ্যান, বসার জায়গা, প্যানেল বোর্ড। টিকিট কাউন্টারের দুটি ঘরেও আগুন লাগানো হয়। প্ল্যাটফর্মে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চলে। রেহাই পাননি রেলকর্মীরাও। পরে আরপিএফ-এর বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। রামপুরহাট থেকে দুটি দমকলের গাড়ি এসে আগুন নেভায়।

রেলের বুকিং সুপারভাইজার শ্যামলকুমার সাউ বলেন, ‘‘টিকিট কাউন্টারে ছিলাম। হঠাৎ এক দল যুবক অফিসে ঢুকে আমাকে এবং এক পোর্টারকে মারতে শুরু করে। অফিসের নথি লাইনে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও রবিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সমস্ত ট্রেন বাতিল ছিল।’’ রামপুরহাটের সন্ধের পরে আটকে ছিল ট্রেন।

৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধের জন্য প্রবল যানজট হয়। দু’দিকে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় ট্রাক, বাস, ছোট গাড়ি। চরম ভোগান্তির শিকার হন অনেকে। পাঁচ ঘণ্টা পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমার পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের মিছিল হওয়ার কথা ছিল। কিছু বহিরাগত অশান্তি করার চেষ্টা করে। সেটি বুঝতে পেরে কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়।’’

এ দিকে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ সাঁইথিয়ার বাতাসপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয় কয়েক হাজার মানুষের বিক্ষোভ মিছিল। বেলা তিনটে নাগাদ বাতাসপুর স্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। শুরু হয় টায়ার জ্বালানো। সন্ধ্যা পাঁচটা চলে বিক্ষোভ। স্টেশনে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। বাস, ট্রেন আটকে থাকে ঘণ্টা দুয়েক। সাঁইথিয়া স্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্মে ডাউন রামপুরহাট শিয়ালদহ মা তারা এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে পড়ে। দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে যায় রামপুরহাট শিয়ালদা প্যাসেঞ্জার। আটকে পড়ে দুটি মালগাড়িও। নাজেহাল হন বাস থেকে ট্রেনযাত্রীরা। বাতাসপুর বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভের সময় একটি চার চাকা গাড়ি দ্রুত গতিতে এসে কয়েক জনকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পিছু নিয়ে কাগাস গ্রামের কাছে গাড়িটি ধরে ফেলে উত্তেজিত জনতা। স্থানীয়দের দাবি, তখন গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। আন্দোলনকারীদের একাংশের আবার দাবি, দ্রুতগতিতে গাড়িটি পালিয়ে যাওয়ার সময় উল্টে যায়। এই ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলেও দাবি আন্দোলনকারীদের। সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে জেলার বিভিন্ন ব্লকে মিছিল করেছে তৃণমূল। দুপুর তিনটে নাগাদ সিউড়িতে তৃণমূলের কার্যালয় থেকে মিছিলের সূচনা হয়। সিউড়ি ১ ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগেও মিছিল হয়। বোলপুর রেল ময়দান থেকে প্রতিবাদ মিছিল বেরোয়। মিছিলে ছিল সম্প্রীতির বার্তা। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি ও এনআরসি বিরোধী কমিটির ডাকে প্রতিবাদ মিছিল হয়। মহম্মদবাজারের হাটতলা কার্যালয় থেকেও তৃণমূলের মিছিল হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Citizenship Amendment Act Birbhum Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE