Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সভায় যাওয়ার পথে ভিড়ে আটকে গেলেন অনুব্রতই 

এর মধ্যেই বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা যখন ঢাকঢোল বাজিয়ে, আদিবাসী নাচের দল সঙ্গে করে যখন চিত্রা সিনেমাতলার রাস্তা পেরোচ্ছেন, তখন রীতিমতো রুদ্ধ হয়েছে পথ। চার দিকে যাওয়ার মানুষ আটকে এক জায়গায়। ঘড়িতে তখন তিনটে বেজে ১০ মিনিট।

উন্মাদনা: সভার পথে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের ভিড়। বোলপুরের রাস্তায়। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

উন্মাদনা: সভার পথে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের ভিড়। বোলপুরের রাস্তায়। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

দূর গ্রামাঞ্চল থেকে কেউ বাসে, কেউ আবার ট্রাকে এমনকি টোটোয় চেপে বোলপুরে এলেন বুধবার। গন্তব্য বোলপুর ডাকবাংলো ময়দান। তৃণমূলের সভার স্থান সেখানেই। তাঁরা জানেন, যেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সকাল থেকেই দলে দলে আসতে শুরু করেছিলেন কর্মী ও সমর্থকেরা। এরই মধ্যে কখন সকাল থেকে দুপুর হয়েছে। সভামঞ্চে তখন অন্য তৃণমূল নেতৃত্বরা বক্তব্য রাখতেও শুরু করেছেন। তখনও বিভিন্ন পঞ্চায়েত থেকে দলে দলে কর্মীরা সভাক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন।

এর মধ্যেই বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীরা যখন ঢাকঢোল বাজিয়ে, আদিবাসী নাচের দল সঙ্গে করে যখন চিত্রা সিনেমাতলার রাস্তা পেরোচ্ছেন, তখন রীতিমতো রুদ্ধ হয়েছে পথ। চার দিকে যাওয়ার মানুষ আটকে এক জায়গায়। ঘড়িতে তখন তিনটে বেজে ১০ মিনিট। এই ভিড়ে আটকে গেল স্বয়ং অনুব্রত মণ্ডলের গাড়িও। তবে অচিরেই তাঁর গাড়ি দেখতে পেয়ে সরে দাঁড়ালেন কর্মীরা। তিনি সভামঞ্চে প্রবেশ করতেই ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনির সঙ্গে বেজে উঠল গানের সুর।

বোলপুরে তৃণমূলের সভা থাকলে এবং সেখানে বক্তা হিসেবে অনুব্রত মণ্ডল উপস্থিত থাকালে জেলার বিভিন্ন অংশ থেকে মানুষ আসেন। স্বাভাবিক জন-জীবনে তার প্রভাবও নতুন কিছু নয়। তবে বুধবার জেলায় জোড়া সভা ছিল। তাতে এক দিকে যেমন শতাধিক লাইনের বাস ছিল না। একই ভাবে রাস্তায় যানজটও হয়। ভোগান্তি কমাতে পৌষমেলার মতোই লালপুল থেকে চিত্রার মোড়ের দিকে আসা বড় গাড়িগুলিকে সুরশ্রীপল্লির ভিতর দিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যাঁরা শান্তিনিকেতন না গিয়ে অন্য দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এ দিন শহরের বেশির ভাগ মোড়েই সিভিক ভলান্টিয়াররা ছিলেন।

অন্য দিকে, সমর্থকেরা যে গাড়িগুলিতে বোলপুর আসেন পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় সেগুলির একাংশ বিশ্বভারতীর মেলার মাঠের কার পার্কিংয়ে রাখা হয়। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, কার পার্কিংয়ে যে কেউ গাড়ি রাখতেই পারেন। তবে কার পার্কিং ছাড়াও মেলার মাঠের মাঝে এবং দমকল অফিস থেকে মেলার মাঠ আসার রাস্তাতেও একাধিক বাস, ট্রাক্টর, সার দেওয়া টোটো দাঁড় করানো ছিল। যদিও এ দিন বিশ্বভারতীর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পড়ুয়াদের এ নিয়ে ভোগান্তি হয়নি। তবে এর আগে ডিসেম্বর মাসে খোল-করতাল বিতরণের দিনেও এই একই ছবি নজরে এসেছিল পড়ুয়াদের। সে দিনও বুধবার থাকায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন তাঁরা।

এ ছাড়াও সভা চলাকালীনও বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মীরা আসেন। শেষ পর্যন্ত ভিতরে ঢুকতে না পেরে অনেকেই বাইরেই ঘোরাঘুরি করেন। মাইকে জেলা সভাপতি সহ অন্য নেতৃত্বের বক্তব্য শোনেন। পুরো বিষয়টিকে অবশ্য ইতিবাচক চোখেই দেখছেন শাসকদলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাঁদের দাবি, এ দিনের সভায় লক্ষাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সেটা বোলপুর শহরে আসা গাড়ির সংখ্যা এবং ভিড় দেখেই যে কেউ অনুমান করতে পেরেছেন বলেই মনে করছেন তাঁরা। তবে সাধারণ মানুষের কোনও ভোগান্তি যাতে না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই যান চলাচল একমুখী করা থেকে শুরু করে মোড়ে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যে পরিমাণে কর্মী এসেছিলেন তার তুলনায় ভোগান্তি অনেক কম হয়েছে বলেই দাবি তাঁদের। তবে ঢাকের আওয়াজ আর মাদলের তালের সঙ্গে আদিবাসী নাচে উৎসবের ছোঁয়া লেগেছিল বোলপুরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Meeting TMC Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE