শনিবার আদালতে তোলা হচ্ছে বিধায়ককে। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার প্রধান করণিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার আদালতে তাঁর এক দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। শুক্রবার বিকেলে পুরুলিয়া স্টেশনে রেলের অনুষ্ঠান থেকে আটক করার পরেও সুদীপবাবুকে গ্রেফতার করার বিষয়ে চাপানউতোর চলছিল। রাত প্রায় ১১টা নাগাদ পুলিশের পক্ষ থেকে সুদীপবাবুকে গ্রেফতার করার খবর জানানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়কের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারিকে কর্তব্যে বাধা দেওয়া), ১৮৬ (সরকারি কাজে বাধা দেওয়া), ৩৭৯ (চুরি) ও ৫০৬ (ভয় দেখানো) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার পুরভবনে এসে পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানকে না পেয়ে পুরসভার চেকবই ও একাধিক নথি নিয়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে। এ দিন বিধায়কের আইনজীবী অরূপ ভট্টাচার্য জামিনের আবেদন জানান। সরকারি আইনজীবী অরুণ মজুমদার আবেদনের বিরোধিতা করে তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদন জানান। তিনি দাবি করেন, অভিযুক্ত প্রভাবশালী। জামিন পেলে তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট কুমকুম চট্টোপাধ্যায় দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে সুদীপবাবুকে এক দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বিধায়কের আর এক আইনজীবী অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘বিকেল ৪টে ৫৫ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৫মিনিট পর্যন্ত দু’টি সিজার্স লিস্ট দেখানো হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায় অভিযুক্ত তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু তা সত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাত সওয়া ৯টা নাগাদ।’’
শনিবার দুপুরে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে পুরুলিয়া সদর থানা থেকে বিধায়ককে কোর্ট লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত চত্বরে থিকথিক করছিল কংগ্রেস এবং সিপিএম কর্মীদের ভিড়। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিধায়ককে গ্রেফতার করা হল বলে শ্লোগান দেন তাঁরা। বিধায়কের বিরুদ্ধে পাল্টা শ্লোগান দিতে থাকেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরাও। এ দিন বিধায়কের গ্রেফতারির প্রতিবাদে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০ এ) জাতীয় সড়কের জয়নগর ও ভাঙড়া মোড়ে এবং পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের গোলকুণ্ডা মোড়ে বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করেন কংগ্রেস এবং সিপিএম কর্মী সমর্থকেরা। বিকেলে শহরে প্রতিবাদ মিছিল করে সিপিএম। শহরে শান্তিভঙ্গের আশঙ্কায় বলরামপুর, পাড়া, রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া মফস্সল-সহ বিভিন্ন থানার ওসিদের শহরে নিয়ে আসা হয়। অন্য পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পারিজাত বিশ্বাস নিজে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy