Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মুমূর্ষু রোগিণীকে রক্ত দিলেন সহকারী সুপার

মঙ্গলবার এক রোগিণীর ও-পজিটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হয়। রোগিণীর আত্মীয়, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘খুব দ্রুত রক্ত দিতে হত।

রক্তদাতা: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নবেন্দুবাবু। —নিজস্ব চিত্র।

রক্তদাতা: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে নবেন্দুবাবু। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

উৎসবের মরসুম শুরুর আগে থেকেই পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে শুরু হয়েছে রক্তের সঙ্কট। ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের জোগান তলানিতে। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার এক রোগিণীকে রক্ত দিলেন খোদ হাসপাতালের সহকারী সুপার।

সদর হাসপাতালেই রয়েছে জেলার একমাত্র ব্লাড ব্যাঙ্ক। এখানে ভর্তি রোগীদের জন্য তো বটেই, রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতাল, আদ্রা রেল হাসপাতাল এবং বিভিন্ন নার্সিং হোমের রক্তের উৎস বলতে সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কই। সদর হাসপাতালেই মাসে গড়ে সাড়ে আটশো থেকে নশো ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। ফি-বছর জুন-জুলাইয়ে বিভিন্ন থানা রক্তদান শিবির করে রক্তের জোগান দিয়ে অবস্থা সামাল দিলেও অগস্ট থেকেই ভাঁড়ারে টান পড়তে থাকে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিভিন্ন শিবির থেকে অগস্টে ৪৬৮ ইউনিট এবং সেপ্টেম্বরে ৬০৬ ইউনিট রক্তের জোগান ছিল। অক্টোবরে পাঁচটি শিবির থেকে এখনও পর্যন্ত দুশো ইউনিটের সামান্য বেশি রক্ত সংগ্রহ করেছে এই ব্লাড ব্যাঙ্ক। জেলার শিবিরগুলি থেকে রক্তের জোগান সে ভাবে না মেলায় গত রবিবার বাঁকুড়ার সোনামুখী থেকে রক্ত জোগাড় করতে হয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্ককে। চলতি মাসে সঙ্কট চরমে ওঠায় যে রোগীদের এক ইউনিটের বেশি রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে, তাঁদের দাতা সংগ্রহ করতে হচ্ছে নিজেদের উদ্যোগে।

মঙ্গলবার এক রোগিণীর ও-পজিটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হয়। রোগিণীর আত্মীয়, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘খুব দ্রুত রক্ত দিতে হত। ব্লাড ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সংশ্লিষ্ট গ্রুপের রক্ত একেবারেই কম রয়েছে। গুটিকয়েক যা ছিল, সবগুলির জন্যই রিক্যুইজিশন জমা পড়ে গিয়েছে। দাতার খোঁজ করছিলাম। সহকারী সুপারকে গিয়ে সঙ্কটের কথা বলাতে তিনি নিজেই রক্ত দিতে রাজি হয়ে গেলেন। তাঁকে ধন্যবাদ।’’ হাসপাতালে রক্তের সঙ্কট কাটাতে দলের পক্ষ থেকে রক্তদান শিবির করার আশ্বাসও দিয়েছেন নবেন্দুবাবু।

রোগীদের রক্ত দেওয়া অবশ্য হাসপাতালের সহকারী সুপার শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের কাছে নতুন নয়। এর আগেও তিনি রোগীদের অনুরোধে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘নবেন্দুবাবু এসে বললেন, ও-পজিটিভ রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে নেই। দাতার খোঁজ করছিলেন। আমিই দিয়ে দিলাম। এটা এমন কিছু বলার মতো বিষয় নয়। এক রোগিণীর প্রয়োজন ছিল, রক্ত দিয়েছি।’’ হাসপাতাল সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘হাসপাতালে বর্তমানে রক্তের একটু সঙ্কট চলছে। ফিমেল মেডিক্যাল বিভাগে ওই মুমূর্ষু রোগিণী ভর্তি ছিলেন। সহকারী সুপার নিজে এগিয়ে এসে তাঁকে রক্ত দিয়েছেন, এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE