Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্যামের ঘরে গুপ্তি নিয়ে ঢোকার ‘চেষ্টা’

বিষ্ণুপুর শহরের মটুকগঞ্জে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামবাবুর বাড়িতে সোমবার রাত ৯টার সময়েও অনেকে আসাযাওয়া করছিলেন। দরজার কাছে ছিলেন তাঁর তিন দেহরক্ষী।

বিষ্ণুপুরের মটুকগঞ্জে পুরপ্রধানের বাড়ির দোরগোড়ায় হামলার চেষ্টার নালিশ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুরের মটুকগঞ্জে পুরপ্রধানের বাড়ির দোরগোড়ায় হামলার চেষ্টার নালিশ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৯
Share: Save:

গুপ্তি নিয়ে বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে আটক করল পুলিশ।

অভিযুক্ত মিলন দাস পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মী। তিনি বিষ্ণুপুর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কুন্দকুন্দা বাজারের বাসিন্দা। কেউ ওই যুবককে তাঁকে খুন করার মতলবে পাঠিয়েছিল বলে দাবি করেন পুরপ্রধান। সময় মতো তাঁর দেহরক্ষীরা ওই যুবককে আটক করায় পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে আটক করে ধারাল অস্ত্র নিয়ে তিনি কী কারণে পুরপ্রধানের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, তা জানতে
চাওয়া হচ্ছে।

বিষ্ণুপুর শহরের মটুকগঞ্জে প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামবাবুর বাড়িতে সোমবার রাত ৯টার সময়েও অনেকে আসাযাওয়া করছিলেন। দরজার কাছে ছিলেন তাঁর তিন দেহরক্ষী। তাঁদের মধ্যে অন্যতম জুনিয়র কনস্টেবল কৃষ্ণেন্দু জানা জানান, নিয়মমাফিক লোকজনের নাম, ঠিকানা লিখে প্রাথমিক ভাবে তল্লাশি করে তাঁদের বাড়ির ভিতরে যেতে দেওয়া হচ্ছিল।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘জিন্স ও কালো কোট পরা যুবকটি এসে জুতো খোলার জন্য নিচু হতেই তাঁর কোমরে গোঁজা ফুট দেড়েকের একটি লোহার দণ্ড মাটিতে পড়ে যায়। কাছে গিয়ে দেখি, সেটি আসলে গুপ্তি। ফাঁপা দণ্ডের ভিতরে ধারাল ফলা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা তাঁকে চেপে ধরতেই হুমকি দেন, শ্যামবাবুকে মারতে এসেছেন। বাধা দিলে আমাদেরও মেরে ফেলার হুমকি দেন।’’

তিন রক্ষী মিলে ওই নেশাগ্রস্ত যুবককে ধরে তাঁরা কাছের বিষ্ণুপুর থানায় নিয়ে যান।

মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তের মা বলেন, ‘‘ছেলে পুরসভায় কাজ করে। নেশা বিশেষ করে না। তবে, সোমবার রাতে কেন জানি না নেশা করে বেরিয়েছিল। পরে খবর পাই পুরপ্রধানের বাড়িতে ছুরি নিয়ে হামলার চেষ্টার জন্য ধরা পরেছে। দু’বছর বিয়ে হয়েছে। একটা বাচ্চা আছে। কী মতিভ্রমে সে এমন কাজ করল বুঝতে পারছি না।’’

দ্বন্দ্বে শ্যামবাবুর ঘনিষ্ঠেরাও। তাঁরা মানছেন, বারবার নানা ঘটনায় বিতর্কে জড়িয়েছেন শ্যামবাবু। কিন্তু, তাঁকে খুনের চেষ্টা কখনও হয়নি। শ্যামবাবুর দাবি, ‘‘দেখা করা নয়, ছেলেটা আমাকে মারতেই এসেছিল। রক্ষীরা সঙ্গে সঙ্গে ধরে না ফেললে বিপদ আমার থেকে কয়েক হাত দূরেই ছিল!’’ এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত হচ্ছে। ভবিষ্যতে সাবধান হতে হবে।’’

কিন্তু, কারা চক্রান্ত করছেন? তা খোলসা না করে শ্যামবাবুর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা আমাকে সহ্য করতে পারে না, তাঁরাই ওকে দিয়ে আমাকে খুন করতে চেয়েছিল। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।’’

সোমবার দুপুরে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আর সেই রাতেই তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান শ্যামবাবুর বাড়িতে হামলার চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে শহরে। শ্যামবাবুও দাবি করছেন, ‘‘শুনেছি ওই ছেলেটি
বিজেপির কর্মী।’’

তা অস্বীকার করে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির দেবপ্রিয় বিশ্বাসের পাল্টা দাবি, ‘‘তৃণমূলের কর্মী না হলে কেউ পুরসভার কাজ পায় নাকি?’’ বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দাবি, ‘‘আমরা বদলার রাজনীতি করি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur Municipality Attempt to Murder BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE