Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

চন্দন গাছ চুরির চেষ্টা বিশ্বভারতীতে

তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দু’টি চন্দন গাছ কাটলেও সেগুলি নিয়ে যেতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। লালবাঁধের জলে ফেলে দিয়ে গিয়েছে গাছের কাণ্ড ও ডালের কাটা টুকরো। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি গাছের বয়সই প্রায় কুড়ি বছর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তার বাজারদর কয়েক লক্ষ টাকা।

হানা: এ ভাবেই কাটা হয়েছে চন্দন গাছ। শুক্রবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

হানা: এ ভাবেই কাটা হয়েছে চন্দন গাছ। শুক্রবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:৫৯
Share: Save:

কাঁটাতারের বেড়া কেটে ঢুকে রবীন্দ্র ভবন আর কলাভবন লাগোয়া মালঞ্চ বাড়ির সামনে দু’টি চন্দন গাছ পাচারের চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতের ঘটনা। ‘ত্রিস্তরীয়’ নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কী ভাবে দুষ্কৃতীরা বিশ্বভারতী চত্বরে ঢুকল, ওই ঘটনার পরে তা নিয়ে উঠল প্রশ্ন।

তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দু’টি চন্দন গাছ কাটলেও সেগুলি নিয়ে যেতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। লালবাঁধের জলে ফেলে দিয়ে গিয়েছে গাছের কাণ্ড ও ডালের কাটা টুকরো। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি গাছের বয়সই প্রায় কুড়ি বছর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তার বাজারদর কয়েক লক্ষ টাকা।

পুলিশ সূত্রে খবর, রাতের অন্ধকারে প্রথমে রবীন্দ্র ভবনের সামনে যায় দুষ্কৃতীরা। উত্তরায়নের পিছন দিকে কাঁটাতারের বেড়ার চারটি অংশ কেটে রবীন্দ্র ভবন চত্বরে ঢুকেছিল তারা। পরে লালবাঁধের জলে ওই গাছের কাটা টুকরোগুলি ফেলে দেয়। একই ভাবে কাটা হয় মালঞ্চ ভবনের সামনে থাকা একটি চন্দন গাছও।

রাতের অন্ধকারে কাঁটাতারের বেড়া কেটে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পাওয়া তথ্য নিয়ে বিস্তারিত কিছু না জানাতে চাইলেও, পুলিশের একটি মহলের খবর, সম্ভবত গ্যাস কাটার দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া কাটা হয়েছিল। বড় করাতে কাটা হয় চন্দন গাছ। তবে ওই কাজে যন্ত্রচালিত করাত ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট হয়নি।

শান্তিনিকেতনবাসীর একাংশের বক্তব্য, যে জায়গায় গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে, তার থেকে ১০০ মিটার দূরেই বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা অফিস। তা ছাড়া বিশ্বভারতী চত্বরে রাতপ্রহরায় মোতায়েন থাকেন অনেক রক্ষীই। তাঁদের নজর এড়িয়ে কী ভাবে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকল, তা নিয়ে ধন্দ ছড়িয়েছে।

শুক্রবার সকালে বিশ্বভারতীর মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় ও অধ্যাপক অশোককুমার গুন ঘটনাস্থলে যান। খবর যায় শান্তিনিকেতন থানায়। বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগ এবং পুলিশ যৌথ ভাবে ওই এলাকায় তল্লাশি চালায়। তখনই লালবাঁধের জলে চন্দন গাছের টুকরো পাওয়া যায়।

এ নিয়ে অশোকবাবু বলেন, ‘‘চন্দন গাছের টুকরোগুলির হদিস মিলেছে। শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ তদন্ত করছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও, ঘটনাস্থলের আশপাশে আলোকস্তম্ভ কম রয়েছে। তাতে ওই এলাকা কিছুটা অন্ধকার থাকে। রাতে সেই সুযোগই নিয়েছে দুষ্কৃতীরা।’’

তবে চন্দন গাছ চুরির ঘটনা এই প্রথম নয় বিশ্বভারতীতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে পরপর নাট্যঘর, রতনকুঠির সামনে চন্দন গাছ চুরি গিয়েছিল। তার পরের বছর বিনয় ভবন চত্বরে হানা দেয় চন্দন গাছ পাচারকারীরা। তা ছাড়া শান্তিনিকেতন এলাকার কয়েকটি ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি থেকেও চন্দন গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছিল। কয়েকটি ক্ষেত্রে চুরি যাওয়া গাছের হদিস মিললেও, সব গাছ উদ্ধার করা যায়নি।

বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার এ নিয়ে বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট মিললে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রুখতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ViswaBharati Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE