Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তারদের গণইস্তফা

এ দিনও মেডিক্যালের আউটডোর খোলেনি। শুক্রবারের মতোই শনিবারও রোগীরা গিয়ে দেখেন, আউটডোরের শাটার বন্ধ। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে ফিরে যান। তাঁদের প্রশ্ন, এ দিন আউটডোর বন্ধ রাখার ব্যাপারে ঘোষণা না থাকা সত্ত্বেও কেন পরিষেবা দেওয়া গেল না?

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা অধ্যক্ষের। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা অধ্যক্ষের। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

গণইস্তফা দিলেন বাঁকুড়া মেডিক্যালের ২১ জন ডাক্তার। শনিবার সন্ধ্যায় এই খবর দিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, ‘‘ইস্তফা দেওয়া ২১ জন ডাক্তারের মধ্যে পাঁচ জন বিভাগীয় প্রধান রয়েছেন। আরও অনেকে ইস্তফা দিতে চেয়েছেন।’’ টানা দু’দিন ধরে আউটডোর বন্ধ থাকার মধ্যে সিনিয়র ডাক্তারদের ইস্তফায় এ বার ইন্ডোরের পরিষেবা নিয়েও দুশ্চিন্তা ঘনিয়েছে।

এ দিনও মেডিক্যালের আউটডোর খোলেনি। শুক্রবারের মতোই শনিবারও রোগীরা গিয়ে দেখেন, আউটডোরের শাটার বন্ধ। দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা হতাশ হয়ে ফিরে যান। তাঁদের প্রশ্ন, এ দিন আউটডোর বন্ধ রাখার ব্যাপারে ঘোষণা না থাকা সত্ত্বেও কেন পরিষেবা দেওয়া গেল না? দুপুরে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধে সিনিয়র ডাক্তারেরা আউটডোরে ঢুকতে পারেননি। তবে জরুরি বিভাগ ও ইন্ডোরের পরিষেবা সচল রাখা হয়েছে।’’ সন্ধ্যায় অধ্যক্ষ অবস্থান মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেন, ‘‘আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলনের পাশে রয়েছি। আজ জুনিয়র ডাক্তারেরা আক্রান্ত হয়েছেন। আগামী দিনে সিনিয়র ডাক্তারেরাও আক্রান্ত হতে পারেন। হাসপাতালের নার্স থেকে কর্মীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আবেদন, যাতে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়, তার দ্রুত ব্যবস্থা
নেওয়া হোক।’’

মঙ্গলবার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের শুরুর দিন থেকেই বাঁকুড়া মেডিক্যালের পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়েছে। এই ক’দিনে শুধু মাত্র বৃহস্পতিবার আউটডোরে পরিষেবা চালু ছিল। তবে হাসপাতালের ইন্ডোর পরিষেবা এতদিন সচল রেখে গিয়েছিলেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। এ দিনও হাসপাতালের সুপার গৌতমনারায়ণ সরকার দাবি করেন, ‘‘ইন্ডোর পরিষেবা সচল রয়েছে।’’

তবে, সন্ধ্যায় ডাক্তারেরা ইস্তফা দেওয়ার পরে ইন্ডোরের পরিষেবা ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। এ ব্যাপারে অবশ্য খোলসা করেননি অধ্যক্ষ। তাঁকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিকে সমর্থন জানানো উচিত বলেই ডাক্তারেরা মনে করেছেন।’’

এ দিন আউটডোরে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন ছাতনার বাসিন্দা অমরনাথ গড়াই। তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা কোথায় চিকিৎসা পাব? আমরা ডাক্তারদের বিপক্ষে নই। জেদাজেদির এই লড়াই এ বার আমজনতার স্বার্থে বন্ধ করা হোক।’’ আন্দোলনকারীদের অবস্থান মঞ্চে গিয়ে সকালে অধ্যক্ষ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁকে জানিয়ে দেন, কর্মবিরতি থেকে সরে আসার প্রশ্ন নেই। সন্ধ্যায় অবস্থান মঞ্চেই গণইস্তফা দেন ২১ জন ডাক্তার। এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমরা অনেক ভেবেই শেষ পর্যন্ত গণইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তে এসেছি।’’

এ দিন স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক করার দাবিতে অরাজনৈতিক ভাবে শহরে একটি মিছিল বের হয়। তাতে যোগ দিয়েছিলেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। তাঁদের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে হাসপাতালের পরিষেবা চালু করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE