Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাশীপুরে কংগ্রেস নেতার পায়ে অস্ত্রের কোপ

গণনা শুরু হতেই কংগ্রেসের এক ব্লক সভাপতিকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়ার কাশীপুরের ওই কংগ্রেস নেতা কার্তিক মালাকারের একটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। তাঁর পায়েও গুরুতর চোট রয়েছে।

রক্তাক্ত: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে কংগ্রেসের  কাশীপুর ব্লক সভাপতি কার্ত্তিক মালাকার। নিজস্ব চিত্র

রক্তাক্ত: পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে কংগ্রেসের  কাশীপুর ব্লক সভাপতি কার্ত্তিক মালাকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিতুড়িয়া ও কাশীপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

গণনা শুরু হতেই কংগ্রেসের এক ব্লক সভাপতিকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়ার কাশীপুরের ওই কংগ্রেস নেতা কার্তিক মালাকারের একটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। তাঁর পায়েও গুরুতর চোট রয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ দিন গণনাকেন্দ্রের ঠিক পাশেই কংগ্রেস ও বিজেপির নেতা-কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে কাশীপুরে। আবার নিতুড়িয়ায় গণনাকেন্দ্রের মধ্যে একটি জায়গায় বিরোধী দলের এজেন্টদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠল। দু’টি ক্ষেত্রেই এলাকায় শাসকদলের দুই বিধায়কের দিকে অভিযোগের তির।

কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূলের কিছু কর্মী-সমর্থক জটলা পাকিয়ে ছিলেন গণনাকেন্দ্রের অদূরে, কাশীপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের অফিসের কাছে। ওই এলাকাতেই কর্মীদের নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কাশীপুর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি কার্তিক মালাকার। অভিযোগ তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে বেদম মারধর করে। কংগ্রেস কর্মীরা প্রথমে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে তাঁরা কার্তিকবাবুকে উদ্ধার করে ভর্তি করান পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। তাঁর একটি হাত ভেঙেছে। পায়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে বলে অভিযোগ। বিকেল পর্যন্ত রক্তপাত বন্ধ না হওয়া, পরে বাঁকুড়ায় পাঠানো হয়।

পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘গণনা শুরুর কিছু সময় পরেই কয়েকটি আসনে বিরোধীরা এগিয়ে রয়েছে শুনে কার্তিক গণনাকেন্দ্রের কাছে গিয়েছিলেন। বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়ার নেতৃত্বে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেদম মারধর করে। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল।’’

এ দিন সকাল থেকেই গণনাকেন্দ্র কাশীপুর পঞ্চকোটরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের অদূরে জমায়েত করেছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। বিরোধী দলের কিছু এজেন্ট ও কর্মীদের গণনাকেন্দ্রে ঢোকার আগেই আটকে এক প্রস্ত মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গোড়ায় অবশ্য তৃণমূল কর্মীরা গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ঢোকেননি। কিন্তু, বেলা গড়াতেই তাঁরা ভিতরে ঢুকে বিরোধীসদলের এজেন্টদের বের করে দেয় বলে অভিযোগ।

অন্য দিকে, বিজেপি-র অভিযোগ, তাঁদের কাশীপুরের নেতা অজিত সিং সর্দারকেও বিধায়কের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া দাবি করেন, ‘‘গণনাকেন্দ্রের আশপাশে কোনও গোলমালই হয়নি। আমাদের কর্মীরা কেন বিরোধীদের মারধর করতে যাবেন? বরং সিপিএম ও বিজেপি এক হয়ে আমাদের এক কর্মীকে মারধর করেছে।’’

অন্য দিকে, নিতুড়িয়াতে এ দিন দুপুরে তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির নেতৃত্বে তৃণমূলের কর্মীরা গণনাকেন্দ্রের মধ্যে ঢুকে বিরোধী দলের এজেন্টদের একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে দেন বলে অভিযোগ। বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘নির্বাচনের দিন যে কায়দায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বুথে ঢুকে ছাপ্পা দিয়েছিল, একই ভাবে এ দিন বিধায়কের নেতৃত্বে ভোটের ফল গণনাতে কারচুপি করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, কাশীপুর ও নিতুড়িয়া দুই জায়গাতেই তৃণমূলের দুই বিধায়কের নেতৃত্বে ভোটের ফল গণনায় কারচুপি করা হয়েছে। সে জন্য জেলার অন্যত্র বিজেপি ভাল ফল করলেও ওই দু’টি ব্লকে আমাদের জয় কারচুপি করে রুখে দিয়েছে। যদিও পূর্ণবাবুর দাবি, ‘‘হার বুঝে বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE