Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Kotshila

কোটশিলার সভায় বিমান

তখন টানা দশ বছর সেখানকার বিধায়ক ছিলেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি নেপাল মাহাতো।

বক্তা: সভায় রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। নিজস্ব চিত্র

বক্তা: সভায় রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও কোটশিলা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৩
Share: Save:

কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন বাতিল, মূল্যবৃদ্ধি রোখা-সহ বিভিন্ন দাবিতে সোমবার পুরুলিয়ার কোটশিলায় মিছিল ও সভা করল পুরুলিয়া জেলা বামফ্রন্ট। জয়পুর বিধানসভাকেন্দ্রের ওই এলাকার সভায় রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও তৃণমূল—এই দুই দলের বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই করতে চান, বামফ্রন্ট তাঁদের সঙ্গেই লড়াইয়ে সামিল হবে।’’ আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সভা করতে এসে দাবি করেছিলেন, জয়পুরে জিতবে কংগ্রেস। এ দিন বামেদের সভার পরে, আসন নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের সাক্ষী জয়পুরে উস্কে উঠেছে জল্পনা।

কোটশিলা এলাকা আগে ঝালদা বিধানসভার মধ্যে ছিল। তখন টানা দশ বছর সেখানকার বিধায়ক ছিলেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি নেপাল মাহাতো। ২০১১ সালে বিধানসভাকেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস হয়। কোটশিলা চলে যায় জয়পুরে। তার পর থেকে নেপালবাবু বাঘমুণ্ডি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোট হয়েছিল। তখন জয়পুরের আসন নিয়ে দুই দলের মধ্যে দড়ি টানাটানি হয়। শেষ পর্যন্ত আসন ছাড়তে রাজি হয়নি তৃণমূল। জেলা কংগ্রেসের নেতা শক্তিপদ মাহাতো নির্দল প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সে বার ভোটে ওই কেন্দ্রে জয়ী হন ফরওয়ার্ড ব্লকের

ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো।

২০১৬ সালের ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট হয়। আসন নিয়ে টানাটানি হয় সে বারও। জেতা আসন ছাড়তে চায়নি বামফ্রন্ট। আবার প্রার্থী হন ধীরেনবাবু। কিন্তু এ বার তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ানো শক্তিপদ মাহাতোর কাছে পরাজিত হতে হয় তাঁকে।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করার পরে নতুন করে উস্কে উঠেছে জল্পনা। গত ডিসেম্বরের গোড়ায় জয়পুরে সভা করতে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ভোটে জয়পুরে কংগ্রেস জিতবে বলে মঞ্চ থেকে দাবি করেছিলেন তিনি। বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন রফা এবং যৌথ কর্মসূচির জন্য এআইসিসি-র তরফে যে চার জনের কমিটি গড়া হয়েছে, তার অন্যতম সদস্য নেপালবাবু এ দিন বলেন, ‘‘বিমানবাবুর বক্তব্যকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে, লড়ার জন্য তাঁকেই বাছা দরকার, যিনি প্রকৃত লড়াই দিতে পারবেন।’’

বিমানবাবু অবশ্য এ দিনের সভায় বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। আসন নিয়ে কোন আলোচনাই এখনও হয়নি। কিছু কিছু কথা বাজারে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সে সব কথায় কান দেওয়ার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না।’’

এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রদীপ রায়, ফরওয়ার্ড ব্লকের বাংলা কমিটির সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। বিজেপি হিন্দুত্বের নামে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তি নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেন নরেনবাবু। রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেও তিনি বলেন, ‘‘এতদিন যদি মানুষ পরিষেবা পেতেন, তা হলে এই নাটকের দরকার হত না।’’

জেলা বিজেপির সহ সভাপতি রবীন সিংহ দেওয়ের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বামফ্রন্টের এখন আর অস্তিত্ব নেই। নেতাদের বয়স হয়েছে। তাই ভুলভাল কথা বলছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, ‘‘মানুষের ভিড়ই দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সাফল্য প্রমাণ করে দিচ্ছে।’’

পুলিশের হিসেবে এ দিনের সভায় ভিড় হয়েছিল হাজার পাঁচেক মানুষের। বামেদের দাবি, সংখ্যাটা দশ হাজার। তৃণমূলের নেতারা দাবি করেছেন, কিছু লোক হয়েছিল। তবে সে সংখ্যাটা তাঁরা ধর্তব্যে আনছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kotshila Biman Basu CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE