Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

দশক পেরিয়ে উন্নয়ন সূচক হবে বীরভূমে

সহযোগিতায় থাকছে ভারত সরকারের নীতি আয়োগ অনুমোদিত সংস্থা বিশ্বভারতীয় ‘এ.কে দাশগুপ্ত সেন্টার ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট’।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দয়াল সেনগুপ্ত
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০০:১০
Share: Save:

এক দশক বাদে ‘মানব উন্নয়ন সূচক’ বা এইচডিআর (হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট) তৈরির পরিকল্পনা নিল বীরভূম। উন্নয়নের মান ঠিক কোন পর্যায়ে, সেটা জানা সম্ভব শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও এলাকার মানুষের জীবন ধারণের মান, মাথাপিছু আয়ের তুলনামূলক বিচার বা মানব উন্নয়ন সূচকের মাধ্যমেই। রাজ্য পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ দফতরের নির্দেশে বীরভূম জেলা পরিসংখ্যান বিভাগ ও পরিকল্পনা বিভাগ যৌথ ভাবে এই সূচক তৈরির দায়িত্ব নিচ্ছে। সহযোগিতায় থাকছে ভারত সরকারের নীতি আয়োগ অনুমোদিত সংস্থা বিশ্বভারতীয় ‘এ.কে দাশগুপ্ত সেন্টার ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট’।

কী ভাবে তৈরি হবে মানব উন্নয়ন সূচক, জেলা পরিষদের সভাকক্ষে তা নিয়েই কর্মশালার আয়োজন হচ্ছে আগামী কাল, বৃহস্পতিবার। উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী (আগে এই দফতরের দায়িত্বে ছিলেন) আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক এবং প্রতিটি ব্লকের বিডিও, স্বাস্থ্য সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প, শিক্ষা দফতরের জেলা ও ব্লক স্তরের আধিকারিকরা।

জেলা পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ বার রাজ্যব্যাপী এই সূচক তৈরি হয়েছিল ২০০৪ সালে। সূচক অনুযায়ী রাজ্যের তৎকালীন ১৭টি জেলার মধ্যে বীরভূমের অবস্থান ছিল ১৪ তম। জেলায় শেষ বার মানব উন্নয়ন সূচক বা এইচডিআর তৈরি হয়েছিল ২০০৮ সালে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা মাথাপিছু আয় বা জীবিকার সুযোগ— মূলত এই তিনটি ক্ষেত্রে জেলার মানুষের অবস্থান কী তার নিরিখে জেলার বিভিন্ন ব্লকগুলিকে মানব উন্নয়নের সূচকের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়েছিল। এর পরে নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে, রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে, বহুবিধ জনকল্যাণকর সরকারি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে মানুষের জীবনধারনের মান শোধরাতে। দফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, তার পরে কতটা উন্নত হয়েছে মান, বর্তমানে বীরভূম ঠিক কোন জায়গায়, সেটা এই উদ্যোগ থেকে জানা যাবে।

কী ভাবে তৈরি হবে সূচক?

দফতর জানাচ্ছে, শিক্ষার হার কেমন, শিশুদের জন্য যে প্রকল্প তার সুযোগ কত জন নিতে পারছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন পাচ্ছেন ওই এলাকার মানুষ। মাথাপিছু আয় কত বা কী ধরনের জীবিকার সুযোগ তৈরি হয়েছে। সে সব জানতে ব্লক ও জেলাস্তরের আধিকারিকদের সাহায্য নেওয়া হবে। জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ছ’টি পুর এলাকা ধরে তৈরি হবে সূচক। প্রতিটি পঞ্চায়েতের একটি করে মৌজা বেছে মোট ৩৩৪০টি পরিবার ও পুর এলাকার ৩০০টি পরিবারে সমীক্ষা চালানোর পরেই তৈরি হবে সূচক।

বীরভূমের পরিসংখ্যান দফতরের সহ-অধিকর্তা তথা এই কর্মসূচির জেলা নোডাল অফিসার হেমন্ত সরকার জানাচ্ছেন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও মাথাপিছু আয় বা জীবিকার সুযোগ ঠিক কেমন এখন মানব উন্নয়ন সূচকে সে সব প্রতিফলিত হবে। ছ’মাসের মধ্যেই তৈরি হবে সূচক। তার সঙ্গে থাকছে সরকারি বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্প সমাজে বা মানব জীবনে কী ধরনের ইতিবাচক দিক তৈরি করেছে তা নিয়েও কাজ হবে। আগামী বৃহস্পতিবারই ১৬ অর্থবর্ষের জেলা পরিসংখ্যান হ্যান্ডবুকও প্রকাশিত হবে।

হেমন্তবাবু মনে করাচ্ছেন, ‘‘দীর্ঘসূত্রিতা এড়াতে গত বছর থেকেই এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন দফতর যেখানে পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ হয় যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পুলিশ-প্রশাসনের মতো ক্ষেত্রগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেই তথ্যের মধ্যে কোনও ক্রটি বিচ্যুতি আছে কিনা তা-ও দেখা হবে। আপডেটেট তথ্য পরিসংখ্যান তুলে ধরাই পরিকল্পনা পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ দফতরের কাজ।’’ তা তৈরি হয়ে গেলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া যেমন সহজতর, তেমন বিজ্ঞানসম্মতও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Human Development report Birbhum বীরভূম
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE