আলোকিত বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র
পুজোর মুখেই বাসস্ট্যান্ড পেল বিষ্ণুপুর। শনিবার রসিকগঞ্জে নতুন বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন করলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, কবে থেকে বাসস্ট্যান্ডে বাস চালু হবে, তা নিয়ে দিনভর জল্পনা চলল শহরজুড়ে। রাতে অবশ্য বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডের দায়িত্বে থাকা পুরসভার পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডে বাস চালু হতে কোনও সমস্যা নেই। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পুরোদমে বাসস্ট্যান্ড চালু হয়ে যাবে। এখন শুধু বাসগুলি বাসস্ট্যান্ডে থাকা যাত্রীদের তুলেই সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ড তুর্কিডাঙায়।’’ কারণ বাসস্ট্যান্ডে দোকানদের স্টল এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। পুরপ্রধানের দাবি, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে দোকানিদের হাতে স্টলের চাবি তুলে দেওয়া যাবে।
জরাজীর্ণ হয়ে পড়া রসিকগঞ্জের বাসস্ট্যান্ড সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মহল থেকে উঠতে শুরু করেছিল। মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরের বাসস্ট্যান্ডের কেন এই দুরাবস্থা থাকবে, তা নিয়ে অনেকে সরব হয়েছিলেন। অবশেষে ২০১৬ সালে প্রশাসনিক জনসভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষ্ণুপুরে আধুনীক বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হবে বলে ঘোষণা করে যান। তারপরেই প্রশাসনিক মহলে নড়াচড়া শুরু হয়। অর্থ বরাদ্দ করে পরিবহণ দফতর। গত বছর জুনে শিলান্যাস হয়। কিন্তু, ভাঙাভাঙি ও পুনর্বাসনের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনা চলায় কাজ শুরু হতে আরও চার মাস গড়িয়ে যায়। সেপ্টেম্বরের শেষে শুরু হয় কাজ।
এক বছরের মধ্যে বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন করতে এসে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এই বাসস্ট্যান্ডের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে সাত কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। এটাই প্রথম বাসস্ট্যান্ড যেখানে মায়েদের শিশুদের স্তন্যপান করানোর জন্য আলাদা ঘর থাকছে। নৈশআবাস থেকে বিশ্রামগৃহ ও বুকিং কাউন্টার প্রভৃতি থাকছে। যাত্রীদের মতোই বাসকর্মীদের স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’
মঞ্চে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু এ দিন পুজোর মুখে বাঁকুড়া জেলার জন্যই নতুন খবর নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই জেলার ২০টি নতুন রুটে পুজোর আগেই নামছে নতুন ৩০টি সরকারি বাস।’’ তিনি এও জানান, দক্ষিণবঙ্গে পথদুর্ঘটনা সব থেকে কম ঘটেছে বাঁকুড়ায়। পথ নিরাপত্তায় এই জেলায় নজির তৈরি করেছে। তিনি আরও জানান, নতুন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও এসেছেন। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে তিনি দক্ষ। এই জেলায় ভবিষ্যতে ট্রমা অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার উচ্ছার কথাও মন্ত্রী এ দিন জানান।
বিষ্ণুপুর শহরকে ঘিরে পরিবহণ দফতরের তিনটি পরিকল্পনার কথা তিনি জানান। প্রথমত, ট্রেকার, অটো স্টপগুলিকে আলোকিত করার জন্য বরাদ্দ দু’কোটির মধ্যে এক কোটি ইতিমধ্যে দেওয়া হয়ে গিয়েছে। প্রথম টাকার হিসাব জমা পড়লেই বাকি এক কোটিও বিষ্ণুপুর পুরসভাকে দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, একটি এসবিএসটিসি ডিপো তৈরি করা হবে। এ ছাড়া, বিষ্ণুপুর এআরটিও- অফিসের চিন্তা-ভাবনা চলছে। বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান এই শহরের সঙ্গে নবদ্বীপের একটি বাস চালুর দাবি জানিয়েছেন।
এ দিন সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস, বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা, পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, স্থানীয় বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy