Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
BJP

বিজেপি অফিসে তালা, পোস্টার দিল অন্য পক্ষ

পরিস্থিতি বুঝে এ দিন দুপুরেই অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। বিকেলে দলের রামপুরহাট মণ্ডল কমিটি ওই কার্যালয়ে বৈঠকেও বসে। 

বন্ধ: কার্যালয়ে তালা। পাশেই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ: কার্যালয়ে তালা। পাশেই সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১৬
Share: Save:

ফের রামপুরহাট শহরে বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। শহরের কামারপট্টি মোড় সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে তালা থাকায় বৈঠক করতে পারলেন না বিজেপি-রই কিসান মোর্চার নেতা-কর্মীরা। বৈঠক করতে না পারার জন্য দলের রামপুরহাট মণ্ডল সভাপতিকে দায়ী করে পোস্টার সাঁটানো হল ওই কার্যালয়ের গায়েই! জেলা বিজেপি সভাপতির হস্তক্ষেপও দাবি করল কিসান মোর্চা।

পরিস্থিতি বুঝে এ দিন দুপুরেই অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। বিকেলে দলের রামপুরহাট মণ্ডল কমিটি ওই কার্যালয়ে বৈঠকেও বসে।

বিজেপি সূত্রের খবর, দলের রামপুরহাট মণ্ডল কমিটির সভাপতি নীলকন্ঠ বিশ্বাস এবং কিসান মোর্চার রামপুরহাট শহর কমিটির সভাপতি বামাপদ মণ্ডলের বিবাদ রয়েছেই। বছর খানেক আগেও দলীয় কার্যালয়ের চাবি না পেয়ে রামপুরহাট শহরে দিনের বেলায় ওই দুই গোষ্ঠীর মারামারি হয়। নীলকন্ঠের মাথা ফেটে যায়। কিসান মোর্চার জেলা সভাপতি সোমনাথ ঘোষ এবং নীলকন্ঠ পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। দু’জনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল সে সময়। এ বারও পুরসভা নির্বাচনের আগে দলের কোন্দল সামনে আসায় অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল অবশ্য বিষয়টিকে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ‘মান-অভিমান’ হিসেবে দেখছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাবতীয় ভুল বোঝাবুঝি, মানঅভিমান দলীয় কর্মীরা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেবেন। সেই মতো নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’

কী হয়েছিল এ দিন?

বামাপদ মণ্ডল জানান, সংগঠনের জেলা সভাপতি সোমনাথ ঘোষ এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে সাংগঠনিক স্তরে কামারপট্টি মোড় সংলগ্ন ওই দলীয় কার্যালয়ে এ দিন সকালে বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু কার্যালয় ছিল তালাবন্ধ। তার চাবি পাওয়া যায়নি। শেষে তাঁরা শহরের অন্য এক জায়গায় বৈঠক করেন। তবে তাঁদের লোকজনই কার্যালয়ে পোস্টারিং করেছে বলে তিনি মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কে বা কারা পোস্টার লাগাল, আমরা বলতে পারব না। তবে আমরা অফিসের চাবি পাইনি, এটা ঠিক।’’

অন্য দিকে, নীলকন্ঠ বিশ্বাসের দাবি, ওই অফিসের চাবি যে দু’জনের কাছে থাকে, তাঁরা তারাপীঠে মৃতদেহ দাহ করতে গিয়েছিলেন। সেই কারণে চাবি পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘এর পরে কী হয়েছে, আমার জানা নেই। তবে শুনেছি, আমাকে দায়ী করে পোস্টারিং করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিকেলে দলীয় অফিসে বৈঠক ডাকা হয়। এর বেশি কিছু আমি বলব না।’’

২০১৫ সালের পুরসভা নির্বাচনের আগেও রামপুরহাট পুরসভায় দলীয় প্রার্থী নিয়ে কোন্দলে তৎকালীন জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। শহরের বিজেপি কর্মীদের বড় অংশের আক্ষেপ, গত পুরভোটে দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভাল থাকলেও স্রেফ গোষ্ঠীকোন্দলের কারণে ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি ৪টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়। তার মধ্যেও তিন জন পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এ বার পুরভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন নিচুতলার কর্মীরা। জেলা সভাপতির যদিও দাবি, ‘‘এই সমস্ত ছোটখাট নিজেদের মধ্যের ব্যাপার পুরভোটে কোনও প্রভাবই ফেলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Conflict Rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE