Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
চলতি মাসে শিবির পুরসভাতেও

থানাপিছু রক্তদান শিবির হবে

গরমে ফি বছরই রক্তের আকাল দেখা দেয়। প্রশাসন মানছে, জেলার ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের অভাবের পিছনে রয়েছে গরমে রক্তদান শিবির না হওয়া। তাতে সঙ্কটে পড়েন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০২:১২
Share: Save:

গরমে ফি বছরই রক্তের আকাল দেখা দেয়। প্রশাসন মানছে, জেলার ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলিতে রক্তের অভাবের পিছনে রয়েছে গরমে রক্তদান শিবির না হওয়া। তাতে সঙ্কটে পড়েন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে সেই ছবি এ বার পাল্টাতে চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ঠিক করেছে, চলতি মাসের ২০ থেকে ২৬ তারিখ রাজ্যের প্রতিটি থানায় একটি করে রক্তদান শিবির করা হবে। পাশে থাকবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসন।

পরে ২৭ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত রাজ্যের প্রতি পুরসভাও একই ভাবে আয়োজন করবে রক্তদান শিবিরের। ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশিকা এসেছে বীরভূমে।

কী ভাবে রক্তদান শিবিরগুলি করা হবে এ নিয়ে সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। তাতে ছিলেন জেলাশাসক, জেলার পুলিশ সুপার, বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচরা। জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলছেন, ‘‘এই কর্মসূচি সফল করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’’ জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার জানিয়েছন, জেলার প্রতিটি থানায় এই শিবির হবে। ২০ তারিখ সন্ধ্যায় শিবির হবে সিউড়ি থানায়।

কেমন সেই প্রস্তুতি?

বীরভূম জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি থানা এবং পুরসভার কী কী করণীয় তা সবিস্তারে জানানো হয়েছে। সিউড়িতে মহিলা থানা-সহ জেলায় মোট থানার সংখ্যা ২৩। প্রতিটি থানায় আয়োজিত রক্তদান শিবির থেকে গড়ে ৫০-৬০ ইউনিট রক্ত পাওয়ার কথা। এই গরমে রক্তাদাতাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই জন্য বিশেষ নজরও রাখা হচ্ছে। বিশেষ করে ডিহাইড্রেশন জনিত সমস্যা এড়াতে সন্ধ্যা ছ’টা থেকে ন’টার মধ্যে রক্তদান শিবিরগুলি করার কথা। ব্ল্যাড ব্যাঙ্কের কর্মী, চিকিৎসক, প্রয়োজনীয় কিট-সহ প্রযোজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং প্রশস্ত এসি হল ঘরে রক্তদান শিবির হোক— মুখ্যমন্ত্রীর তেমনই ইচ্ছে।

জেলার মধ্যে থাকা ব্ল্যাড ব্যাঙ্কগুলির রক্ত মজুত রাখার ক্ষমতা অনুযায়ী রক্ত সংগ্রহ করে প্রতিটি ব্যাঙ্কে সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, থানা ও পুরসভাগুলি ব্লক ও জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রক্তদান শিবিরগুলি যাতে সুষ্ঠু ভাবে করতে পারে, তার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। বীরভূমের সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘সিউড়ি জেলা হাসপাতালে ৫০০ ইউনিট ও বোলপুরে ৩০০ ইউনিট রক্ত মজুত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সিউড়ি জেলা হাসপতালে প্রতিদিন গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ ইউনিট রক্ত লাগে। অন্য দিকে, বোলপুরে দিনে ১৫ ইউনিট রক্তের জোগান লাগে।’’ রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ ব্রজেশ্বর মজুমদার জানান, রামপুরহাট ব্ল্যাডব্যাঙ্কে রক্ত মজুত রাখার পরিমাণ ৫০০ ইউনিট। সিউড়ি হাসপাতালের মতো এখানেও দিনে গড়ে ৩৫-৪০ ইউনিট রক্ত লাগে।

তবে জেলার কোনও ব্ল্যাডব্যাঙ্কেই রক্তের উপাদান আলাদা করার ব্যবস্থা নেই। ওই সুবিধা না থাকলেও রক্ত মজুত রাখার পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই। এমনই দাবি সিউড়ি হাসপাতালের সুপার শোভন দে-এর। শোভনবাবু বলছেন, ‘‘এই মুহূর্তে রক্তের চাহিদার সঙ্গে জোগানের সামান্য ঘাটতি রয়েছে। এই রক্তদান শিবিরগুলি হলে পরিস্থিতি উন্নত হবে। এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’

রামপুরহাটে রোগীদের জন্য রক্ত লাগলে রোগীর পরিজনদের থেকে অন্য গ্রুপের সম পরিমাণ রক্ত ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয়। এই বিনিময় প্রথা চালু থাকায় রক্তের সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে, স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের গুরুত্ব মানছেন সকলেই। সে দিক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Crisis Blood Donation Camp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE