Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রামপুর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন পিছোল

দিন নির্দিষ্ট করেও ফের পিছিয়ে দেওয়া হল  মহম্মদবাজারের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।

নজরবন্দি: রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

নজরবন্দি: রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

দিন নির্দিষ্ট করেও ফের পিছিয়ে দেওয়া হল মহম্মদবাজারের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড ইতিমধ্যেই গঠিত হয়েছে। প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত। শনিবার শেষ ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন ধার্য ছিল। ১৪টির বোর্ড গঠন হলেও বাকি রয়ে গেল শুধু তৃণমূল ও বিজেপি ৩-৩ ফলে ‘টাই’ হয়ে থাকা মহম্মদবাজারের রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, শুক্রবার গভীর রাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্বাচিত সদস্যদের বাড়িতে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় মহম্মদবাজারের বিডিও আশিস মণ্ডলের পক্ষ থেকে। তাতে জানানো হয়, শনিবার বোর্ড গঠনের দিন ঠিক থাকলেও সে দিনই বামপন্থী যুব ও ছাত্র সংগঠনের ডাকা ধর্মঘট ও মহরমের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে বোর্ড গঠনের দিন বদলের অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার আইসি মাধব মণ্ডল। তাই ফের বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়া পর্যন্ত বোর্ড গঠন স্থগিত থাকবে।

বিজেপি অবশ্য এর মধ্যে যড়যন্ত্র দেখছে। দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘‘এই নিয়ে দু’বার এমন কাণ্ড হল। ২৭ অগস্ট বোর্ড গঠনের আগের দিনও একই ভাবে আইনশৃঙ্খলার অজুহাতে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা বন্ধ করে প্রশাসন। এটা ষড়যন্ত্রই।’’ রামকৃ্ষ্ণবাবুর ব্যাখ্যা, ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল টসে। কিন্তু তার ফল কী হবে তা নিয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত নয় শাসক দল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘টসের আগে আমাদের কোনও সদস্যকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করছে শাসকদল। কিন্তু এখনও সেই অঙ্ক মেলাতে না পেরে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় বোর্ড গঠন পিছিয়ে দিচ্ছে।’’ মহম্মদবাজারের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তাপস সিংহ বলছেন, ‘‘অঙ্ক মেলানোর বিষয় নয়, শুক্রবার রাতে ঝামেলা করার জন্য এলাকায় লোক জড়ো করেছিল বিজেপি। পুলিশের কাছে খবর গিয়েছিল। তাই প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত।’’

এ নিয়ে মুখ খোলেননি বিডিও বা আইসি। তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন— ‘‘পুলিশ না থাকলে তো ঝুঁকি নেওয়া যায় না।’’ এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশকর্মী না থাকলে আমরাই বা এগোই কী করে।’’

১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬৪টি জিতেছে তৃণমূল। শাসকদলের অস্বস্তি ছিল তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ঘিরে। ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের মল্লারপুর ১ এবং মহম্মদবাজার ব্লকের গণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এই দু’টিতেই নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে বোর্ড গঠন করেছে বিজেপি। কিন্তু জট রয়েছে রামপুর পঞ্চায়েতে।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রামপুর পঞ্চায়েত ছিল সিপিএমের হাতে। মাঝপথে সিপিএমের প্রধান সরাসরি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা ভোগ করেছিল শাসকদল। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ বার ভোটে অবশ্য তৃণমূলের বিপক্ষেই ভোট দিয়েছেন এলাকার একটা বড় অংশের মানুষ। পঞ্চায়েতের ৩টি আসন তো বটেই, পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা মহম্মদবাজার পঞ্চায়েত সমিটির ২টি আসনও বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ‘ঔদ্ধত্য’, ‘দুর্নীতি’, ‘পক্ষপাতিত্বে’ ক্ষুব্ধ হয়েই মহম্মজবাজারের বাসিন্দাদের একাংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন। জেলায় সীমিত সংখ্যক আসনে নির্বাচনে যে ব্লকে বিজেপি তৃণমূলকে ভাল টক্কর দিয়েছে, সেটা মহম্মদবাজারই। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, যে সব ভুলের জন্য জমি আলগা হয়েছে শাসকদলের, সে সব শুধরে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE