Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ডিএমের ‘পরামর্শে’ স্কুলে ফিরল ৭ পড়ুয়া

স্কুল ও শিক্ষকদের কুৎসা করে স্মার্টফোনে একটি ভিডিয়ো তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে একাদশ শ্রেণির ৭ পড়ুয়াকে সাময়িক ভাবে স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। ২৪ অগস্ট ওই বিষয়টি জানানো হয় অভিযুক্তদের অভিভাবকদেরও।

ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।

ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

জেলাশাসকের পরামর্শ মেনে ভিডিয়ো-কাণ্ডে জড়িত ৭ ছাত্রকে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দিলেন বীরভূম জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষ। বুধবারই স্কুলে ফিরেছে ওই পড়ুয়ারা।

স্কুল ও শিক্ষকদের কুৎসা করে স্মার্টফোনে একটি ভিডিয়ো তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে একাদশ শ্রেণির ৭ পড়ুয়াকে সাময়িক ভাবে স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল। ২৪ অগস্ট ওই বিষয়টি জানানো হয় অভিযুক্তদের অভিভাবকদেরও।

স্কুলের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দ্বিমত ছিল। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামেও ছিল সেই খবর। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সোমবারই স্কুলের এক প্রতিনিধিদল জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন। ওই দলে ছিলেন প্রধান শিক্ষক চন্দন সাহা সহ স্কুলের আরও চার প্রবীণ শিক্ষক। কোন পরিস্থিতিতে স্কুলে টিচার্স কাউন্সিল ওই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, সে কথা জেলাশাসককে জানানো হয়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলাশাসক তাঁদের জানান, ওই ছাত্রেরা ক্ষমা চেয়েছে। তা-ই তাদের ক্লাসে ফেরতে আসার সুযোগ দেওয়া উচিত।

জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তার কাছ থেকে এমন পরামর্শ পাওয়ার পরে আর দেরি করেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবারই ফের বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই ছাত্রদের স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। বুধবার থেকেই ক্লাস শুরু করে ওই ৭ পড়ুয়া। এতে খুশি অভিভাবকেরা। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুচলেকা দিয়ে ওই পড়ুয়ারা জানিয়েছে, এমন কাণ্ড ভবিষ্যতে আর কখনও করবে না।

চন্দনবাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও ভাবে চাইনি যে ওই শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হোক। কিন্তু ওরা যে অন্যায় করেছে, সেই অনুভব ওদের মনে ঢোকাতে চেয়েছিলাম।’’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে— পরীক্ষার হলে চেয়ারে বসে ঢুলছেন ‘শিক্ষক’। সুযোগ বুঝে চলছে দেদার টুকলি, অন্যের খাতা দেখে লেখালেখি। শিক্ষক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হতেই আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে কয়েক জন পড়ুয়া। শিক্ষকের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে নেওয়া থেকে নানা অভব্যতা চালাতে থাকে। ঘুম ভাঙলে ছাত্রদের তিরস্কার করে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যান শিক্ষক। ভিডিয়োর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্যাড এগজাম’। ওই ভিডিয়োয় শিক্ষক, পড়ুয়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছিল ওই ৭ ছাত্রই।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে স্কুলের পড়ুয়াদের একাংশের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োর খবর জানতে পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ভিডিয়োয় থাকা ৭ পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে ডেকে পাঠানো হয়। ডাকা হয় তাদের অভিভাবকদেরও। পড়ুয়াদের দাবি, তারা মজার ছলে এটা করে ফেলেছে। ‘অভিঘাত’ এমন হবে বুঝতে পারেনি। তবে স্কুল সিদ্ধান্ত নেয়, এমন অন্যায়ের পরে ওই পড়ুয়াদের স্কুলে ক্লাস করতে দেওয়া হবে না।

ওই ঘটনা নিয়ে দ্বিমত ছিল অভিভাবকদের। তাঁদের একাংশ বলেছিলেন — অন্যায় করেছে ওই ছাত্ররা। স্কুল সঠিক পদক্ষেপ করেছে। অন্য অংশের দাবি ছিল—তিরষ্কার করতে হবে। সতর্ক করতে হবে। কিন্তু ক্লাস করতে না দিলে ছাত্রেরা পিছিয়ে পড়বে। তা পড়ুয়া ও স্কুল উভয়ের জন্যই ক্ষতিকারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student School District Magistrate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE