Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
firearms

শহরের প্রাণকেন্দ্রে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ধৃত, প্রশ্নে নিরাপত্তা

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজনের দাবি, রাতের অন্ধকারে প্রতিদিন ওই মাঠে অসামাজিক কাজ হয়। যার প্রমাণ মিলল এই গ্রেফতারের ঘটনায়। মাঠে কোনও আলো থাকায় সন্ধ্যা নামার পরেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে ওই মাঠ। তাই সেখানে নেশাড়ু ও দুষ্কৃতীদের আসর বসে বলেও অভিযোগ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১৭
Share: Save:

জেলা সদরের প্রাণকেন্দ্র থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ তিন জনকে গ্রেফতারের ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বুধবার রাতে সিউড়ি জেলা স্কুলের মাঠ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও তিনটি গুলি সহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে অনিমেষ মুখোপাধ্যায় মহম্মদবাজার ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তিনি সিউড়ি পুর এলাকার সুরিপুকুরপাড়ার বাসিন্দা। বাকি দু’জন হল প্রসেন গড়াই এবং সন্তোষ দাস। প্রসেন সিউড়ি পুর এলাকার বারুইপাড়া ও সন্তোষ মল্লিকঘুনাপাড়ার বাসিন্দা। বুধবার সন্ধ্যায় সিউড়ি জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের পিছনে থাকা জেলা স্কুল মাঠ থেকে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের সিউড়িতে জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে ২৫, ২৭ ও ৩৫ অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। এই নিয়ে সরকারী আইনজীবী কেশব দেওয়াসী বলেন, ‘‘ধৃতদের এ দিন আদালতে তোলা হলে পুলিশ সাত দিনের হেফাজত চায়। কিন্তু মাননীয় বিচারক সব দিক দেখে শুনে দুদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।’’

তবে ধৃতেরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কী কারণে ওই মাঠে এসেছিল, তাঁদের উদ্দেশ্যই বা কী ছিল সেই সম্পর্কে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে খোলসা করে কিছু না বলা হয়নি। পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘আচমকা নজরদারি চালানোর সময় ওঁদের ধরা হয়েছে। ওঁদের কাছে থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। কী কারণে বা কী উদ্দেশ্যে তাঁরা ওখানে এসেছিলেন তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ধৃত প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের ভাই উপানন্দ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, ‘‘মিথ্যা অভিযোগে দাদাকে ফাঁসানো হচ্ছে। দাদা অল্প বয়সে চাকরি পেয়েছে তাই হিংসায় কেউ হয়ত ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।’’

তবে, জেলা প্রশাসন ভবন চত্বর থেকে এ ভাবে অস্ত্র-সহ গ্রেফতারের ঘটনায় শহরজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরবাসীর একাংশের দাবি, গত কয়েকমাস ধরেই জেলা স্কুল মাঠ নেশাড়ুদের আড্ডার স্থান হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর প্রচুর যুবক বাইক নিয়ে ওই মাঠে এসে হাজির হন।

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক কয়েকজনের দাবি, রাতের অন্ধকারে প্রতিদিন ওই মাঠে অসামাজিক কাজ হয়। যার প্রমাণ মিলল এই গ্রেফতারের ঘটনায়। মাঠে কোনও আলো থাকায় সন্ধ্যা নামার পরেই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে ওই মাঠ। তাই সেখানে নেশাড়ু ও দুষ্কৃতীদের আসর বসে বলেও অভিযোগ।

ওই মাঠের অবস্থান জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের ঠিক পিছনে। মাঠের পাশেই রয়েছে জেলা পরিষদ ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। জেলাশাসকের দফতর থেকেও ঢিল ছোড়া দূরত্বে মাঠটি রয়েছে। তাই ওই মাঠের অবস্থান সিউড়ি আর পাঁচটা মাঠের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মাঠে এখন দুষ্কৃতীদের আসর বসতে শুরু করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই অভিযান চালানো হয় ঠিকই কিন্তু মাঠে নেশার আসর অব্যাহত রয়েছে বলেই দাবি শহরবাসীর একাংশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

firearm crime police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE