Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রী-খুনের চার্জশিট

বোরো থানা এলাকার বছর সতেরোর ওই ছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করে বান্দোয়ানের একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। পড়াশোনা করত জেঠুর বাড়িতে থেকে। গত ৩ মে পড়তে বেরিয়েছিল। কথা ছিল, সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যাবে। কিন্তু ফেরেনি।

ফিরে-দেখা: ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ে ধৃত অরুণ মাহাতোকে নিয়ে জামিরা টিলায় পুলিশ। ফাইল ছবি

ফিরে-দেখা: ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ে ধৃত অরুণ মাহাতোকে নিয়ে জামিরা টিলায় পুলিশ। ফাইল ছবি

রথীন্দ্রনাথ মাহাতো
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৩
Share: Save:

বোরোর স্কুলছাত্রী খুনের মামলায় চার্জশিট জমা করল সিআইডি। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার সিজেএম কোর্টে ওই চার্জশিট জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, তাতে পুলিশের তদন্তেই কার্যত সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ নেই ধর্ষণের। তবে নিহত ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা এই চার্জশিটে সন্তুষ্ট নন। উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন।

বোরো থানা এলাকার বছর সতেরোর ওই ছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করে বান্দোয়ানের একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। পড়াশোনা করত জেঠুর বাড়িতে থেকে। গত ৩ মে পড়তে বেরিয়েছিল। কথা ছিল, সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যাবে। কিন্তু ফেরেনি। পরিবারের অভিযোগ ছিল, ওই দিন অভিযোগ নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। ৬ মে বান্দোয়ান থানায় ছাত্রীর বাবা অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে উল্লেখ করা হয় অরুণ মাহাতো এবং অরিজিৎ মাহাতো নামে দুই যুবকের নাম। ৯ মে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ১০ মে বোরোর জামিরা টিলা থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রীর দেহ।

অরুণ বান্দোয়ান মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অরিজিৎ আঁকরোর একটি দোকানের কর্মচারী। দু’জনেই থাকে বোরোর হাতিরামগোড়া গ্রামে। পুলিশের দাবি ছিল, অরুণ জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। দাবি করেছে, তার সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি অরিজিতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে দু’জনের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। সেই নিয়েই কথা বলতে ছাত্রীকে বান্দোয়ান বাসস্ট্যান্ডে ডেকে পাঠায় সে। পড়শির মোটরবাইকে চড়িয়ে নিয়ে যায় জামিরা টিলায়। সেখানে কথা-কাটাকাটি চলাকালীন হঠাৎ ছাত্রীর মোবাইলে অরিজিতের ফোন আসে। অরুণের দাবি, ফোন কেড়ে ছুড়ে ফেলে দেয় সে। ছাত্রীর গলা টিপে ধরে। মৃত্যুর পরে একটা খন্দে দেহ ফেলে আলগা পাথর চাপা দিয়ে নেমে আসে।

পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিল নিহত ছাত্রীর পরিবার। একই অভিযোগ ছিল বিভিন্ন সংগঠনের। ঘটনার বিচার চেয়ে পুরুলিয়া থেকে হেঁটে কলকাতা গিয়েছিলেন তিন যুবক। অভিযোগ করা হয়েছিল, দোষীদের কাউকে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে। অভিযোগ ছিল, ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। গত ২৬ মে ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে। তার ৭৪ দিন পরে মামলার চার্জশিট জমা করল তদন্তকারী সংস্থা।

পুরুলিয়া আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী পার্থসারথি রায় জানান, চার্জশিটে শুধু অরুণের নাম রয়েছে। যোগ হয়েছে ৩৬৩ (জোর করে অপহরণ), ৩৬৫ (অসৎ উদ্দেশ্যে অপহরণ), ৩০২ (খুন) ও ২০১ (তথ্যপ্রমাণ লোপাট) ধারা। উল্লেখ নেই ধর্ষণের। নিহত ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘‘আমরা এই তদন্তে সন্তুষ্ট নই। মোবাইলটা উদ্ধার হলেই আসল সত্যিটা প্রকাশ্যে আসবে।’’ সূত্রের খবর, ছাত্রীর মোবাইলের পিছনের ঢাকনা উদ্ধার করতে পারলেও ফোনের হদিস এখনও মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Chargesheet CID
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE