সরেজমিন: মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস তৈরির কাজ চলছে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে এসে রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছ’বছর পরে ১ অগস্ট, বৃহস্পতিবার থেকে জেলার প্রথম সেই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পঠনপাঠন শুরু হতে চলেছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সে দিন ক্লাস শুরু হবে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য ১০০টি আসনের অনুমোদন মিলেছে। তার মধ্যে ১০টি আসন সর্বভারতীর মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৯০টি আসনে ভর্তি হতে পারেন এ রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্সে উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল সুজয় মিস্ত্রি জানিয়েছেন, সর্বভারতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পাঁচ পড়ুয়া ইতিমধ্যেই সেখানে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া প্রথম পর্যায়ে ভর্তি হয়েছেন এ রাজ্যে জয়েন্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮৪ জন। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি ১১টি আসনে ভর্তি প্রক্রিয়া বুধবার করা হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও কমিউনিটি মেডিসিন পড়ানো হবে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য ৬-৭ জন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। ওই মেডিক্যাল কলেজে এখন রয়েছেন ৫৯ জন শিক্ষক। সোমবার স্বাস্থ্যভবনে এক বৈঠকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য আরও ১৫-১৬ জন শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রামপুরহাট জেলা হাসপাতালের মূল ভবন ও রামপুরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পাশে মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের জন্য অ্যাকাডেমিক ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। পড়ুয়াদের হস্টেল এবং মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক, ও শিক্ষাকর্মীদের আবাসন তৈরি হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে চকমণ্ডলায়।
কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সেই নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। মঙ্গলবার সকালে চকমণ্ডলায় দেখা গিয়েছে, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, শিক্ষক ও কর্মীদের আবাসন তৈরির কাজ তখনও চলছে। তবে নির্মাণকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলের দু’টি ভবন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়েছে। একই ভাবে হস্তান্তরিত হচ্ছে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য তৈরি দু’টি ভবনের একটি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, চকমণ্ডলা থেকে কালীডাঙা মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার এবং চকমণ্ডলায় মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের ছাত্রাবাসে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থার বিষয়ে সপ্তাহখানেক আগে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু রামপুরহাটে একটি বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে পড়ুয়া, শিক্ষক সহ কলেজের অন্য কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বাস পরিষেবা নিয়েও আলোচনা করেছেন জেলাশাসক।
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল সুজয়বাবু জানান, পানীয় জল সরবরাহের জন্য ছাত্রাবাস ও আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ব্যবস্থা নিয়েছে। কলেজে যাতায়াতের জন্য পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাসের ব্যবস্থা করেছেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রাস্তা সংস্কারের বিষয়েও তিনি উদ্যোগী হয়েছেন।
আশিসবাবু জানান, চকমণ্ডলায় রাস্তা সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে বলা হয়েছে। ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদের তরফে নির্দেশও জারি করা হয়েছে। চকমণ্ডলা যাতায়াতের জন্য বাসমালিক সমিতির সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। সমিতির তরফে ওই রুটে বাস পরিষেবার কথা বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy