Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

অবশেষে তারাপীঠে শুরু হল দ্বারকা নদের সংস্কার

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শেষমেশ দ্বারকা নদ সংস্কারের কাজ শুরু করল বীরভূম জেলা প্রশাসন। বুধবার সকালে তারাপীঠে দ্বারকা নদের সেতু থেকে আধ কিলোমিটার উত্তরে মুণ্ডমালিনী তলার কাছে জেসিবি যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে নদী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়।

খাল নয়, পচা ডোবাও নয়। এই হচ্ছে দ্বারকা নদের বর্তমান হাল। বুধবার তারাপীঠে লুপ্তপ্রায় এই নদীর ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

খাল নয়, পচা ডোবাও নয়। এই হচ্ছে দ্বারকা নদের বর্তমান হাল। বুধবার তারাপীঠে লুপ্তপ্রায় এই নদীর ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তারাপীঠ শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৫ ০০:৩১
Share: Save:

জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে শেষমেশ দ্বারকা নদ সংস্কারের কাজ শুরু করল বীরভূম জেলা প্রশাসন। বুধবার সকালে তারাপীঠে দ্বারকা নদের সেতু থেকে আধ কিলোমিটার উত্তরে মুণ্ডমালিনী তলার কাছে জেসিবি যন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে নদী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়।

প্রশাসন সূত্রের খবর, তারাপীঠে দ্বারকা নদের উত্তর ও দক্ষিণ দিক মিলিয়ে ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীকে রুদ্ধ করে দেওয়া আবর্জনা সাফাই করা হবে। নদী বক্ষে উত্তর দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশের মধ্যে কোথাও তিন ফুট চওড়া কোথাও বা দু’ফুট চওড়া এবং দু’ফুট গভীর নালা করে প্রথমে নদীর নোংরা আবদ্ধ জল বের করে দেওয়া হবে। পরে যন্ত্রের মাধ্যমে নদীর বক্ষে জমে থাকা আবর্জনা তুলে ফেলা হবে এবং নদীর নাব্যতা বাড়ানো হবে। অন্য দিকে, দক্ষিণ দিকে শ্মশান লাগোয়া এলাকায় জমে থাকা জল যন্ত্রের মাধ্যমে তুলে ফেলে পরে নদীর বুকে জমা জঞ্জাল পরিষ্কার করা হবে। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সকাল থেকে এসডিও (রামপুরহাট) উমাশঙ্কর এস সংস্কারের কাজ তদারকি করছেন। পরে অতিরিক্ত জেলাশাসক (‌জেলাপরিষদ) বিধান রায়ও এলাকায় পৌঁছন। ছিলেন স্থানীয় দুই পঞ্চায়েতের কিছু কর্মী এবং জেলা পরিষদ সদস্য মান্নান শা-ও। পরে এসডিও বলেন, ‘‘নদীকে প্রায় মজিয়ে ফেলা এই নোংরা আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ আমরা শুরু করেছি। প্রয়োজনে নদীর নাব্যতাও বাড়ানো হবে। আপাতত নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য একটি খাসজমি খোঁজা হচ্ছে। খরুণ ও সাহাপুর পঞ্চায়েত সেই কাজ করবে।’’

ইতিমধ্যেই তারাপীঠে দ্বারকা নদের দূষণ মামলায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ দিয়েছে, খরুণ ও সাহাপুর— এই দুই পঞ্চায়েতকে নিজ নিজ এলাকায় লজ-হোটেল-রেস্তোরাঁ ও সব্জি বাজার থেকে যাবতীয় নোংরা জঞ্জাল আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। আবর্জনা ফেলার খরচ পঞ্চায়েত লজ-হোটেল-রেস্তোরাও-সহ অন্যান্য দোকানের মালিকদের কাছ থেকে আদায় করবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, তারাপীঠ শ্বশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণের জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দফতর থেকে ডিপিআর-ও তৈরি করা হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া এলাকার সমস্ত হোটেল-লজ-রেস্তোরাঁয় ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে’র কাজ করার জন্য জন স্বাস্থ্য কারিগরী দফতরও একটি ডিপিআর তৈরি করে দিয়েছে। পাশাপাশি তারাপীঠ শ্মশান যাওয়ার জন্য কবিচন্দ্রপুর থেকে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

এ দিকে, তারাপীঠে দ্বারকা নদের উপর নোংরা আবর্জনা ও জমা জল পরিষ্কার করার জন্য সেচ দফতর কাজ শুরু করে দিয়েছে। দফতরের কর্মীদের এ দিন দ্বারকা নদের পাড়ে মাপজোক করতে দেখা যায়। দফতরের ময়ূরাক্ষী উত্তর বিভাগের মহকুমার নির্বাহী বাস্তুকার তরুণ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কাজ হচ্ছে। আমাদের নদীর নাব্যতার বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। সেই মতো এ দিন থেকে জরিপের কাজ শুরু হয়েছে।’’ কিন্তু, দ্বারকা নদের সংস্কার নিয়ে এত দিন কেন ভাবা হয়নি? তরুণবাবুর জবাব, ‘‘এ প্রশ্নের জবাব আমি কী করে দেব বলুন তো?’’

অন্য দিকে, সৌন্দর্যায়নের জন্য তারাপীঠের মধ্যে দিয়ে যাওয়া রামপুরহাট-সাঁইথিয়া রাস্তার দু’ধারে যে সব দোকানদার অবৈধ ভাবে জায়গা দখল করেছিল, তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশ মেনে এ দিনই দোকানদারেরা তা ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছেন। একই দৃশ্য দেখা গেল তারাপীঠ সেতু থেকে মন্দির যাওয়ার রাস্তাতেও। এর ফলে তারাপীঠ মন্দির যাওয়ার রাস্তা আরও প্রশস্ত ও খোলামেলা থাকার জন্য দর্শনার্থীদের মন্দিরে যাতায়াত করতে সুবিধা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE