Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

গলায় ফাঁস লাগানো ছবি পাঠিয়ে ‘আত্মঘাতী’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কড়িধ্যার বাসিন্দা অভিযুক্ত  যবকের সঙ্গে ওই তরুণের বছর ছাব্বিশের মৃত তরুণীর আলাপ এক সঙ্গে বিএড পড়ার সময়।

আত্মঘাতী শুভ্রা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

আত্মঘাতী শুভ্রা মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

‘প্রেমিকে’র হোয়্যাটস অ্যাপে গলায় ফাঁস দেওয়া ছবি পাঠালেন তরুণী। তার কিছুক্ষণ পরে নিজের ঘর থেকেই উদ্ধার হল ওই তরুণীর ঝুলন্ত দেহ। মৃত তরুণী সিউড়ির এক কলেজের শিক্ষিকা। রবিবার রাতে সিউড়ির ডাঙ্গালপাড়ার ঘটনা। মৃতার মোবাইলে পাওয়া ছবি এবং যে যুবককে তিনি ছবি পাঠিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ফোনের কথোপকথন দেখার পরে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই যুবককে রবিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়। সোমবার তাঁকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কড়িধ্যার বাসিন্দা অভিযুক্ত যবকের সঙ্গে ওই তরুণের বছর ছাব্বিশের মৃত তরুণীর আলাপ এক সঙ্গে বিএড পড়ার সময়। পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তরের পরে ধৃত যুবক সিউড়ির একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। পিএইচডি করারও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, রবিবার রাতে ওই তরুণী বাড়িতে একাই ছিলেন। তাঁর মা এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং বাবা ব্যবসার কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন। রাত ১০টা নাগাদ ওই তরুণীর মা বাড়ি ফিরে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ডাকাডাকি করাতেও মেয়ে দরজা না খোলায় চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন। তাঁর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভাঙেন। তরুণীর ঘরে গিয়ে সকলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড়ের ফাঁস দেওয়া তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। কোনও রকমে ফাঁস খুলে সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। রাতেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন মৃতার বাবা।

তাঁদের অভিযোগ, দু’বছর ধরে ওই তরুণের সঙ্গে অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওই তরুণী বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় তিনি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। বিয়ে নিয়ে টানাপড়েনের জেরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন ওই যুবক বলে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে। পরিবারের দাবি, দিন তিনেক ধরে এই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই তরুণী। শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। আত্মহত্যার আগে গলায় কাপড়ের ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দু’টি নিজস্বীও ওই যুবককে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠান। কিন্তু তাতেও যুবক গুরুত্ব না দেওয়ায় আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন ওই তরুণী— এমনই অভিযোগ মৃতার পরিবারের।

অন্য দিকে, অভিযুক্ত যুবকের পরিবারের সদস্যেরা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। ধৃতের এক ঘনিষ্ঠ অাত্মীয় বলেন ‘‘মিথ্যা অভিযোগ করে আমাদের বাড়ির ছেলেকে পুলিশে ধরানো হয়েছে। কে কাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল বা আদৌ কোনও সম্পর্ক ছিল কি না পুলিশ ভাল ভাবে তদন্ত করলেই প্রমাণিত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rampurhat Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE