কলেজ ছাত্রীকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী দুই যুবকের বিরুদ্ধে। সোমবার রাত এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে তারাপীঠের খামেড্ডা গ্রামে। গুরতর জখম অবস্থায় ওই তরুণী রামপুরহাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মুখের বাঁ দিকে এবং শরীরের নানা জায়গায় অ্যাসিডের ক্ষত রয়েছে। অভিযুক্ত যুবকদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রের খবর, ওই তরুণী প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণের প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরে এখন রামপুরহাটে কলেজে ইতিহাসে অনার্স পড়ছেন। তাঁর বাবার অভিযোগ, কয়েক মাস ধরেই গ্রামের দুই যুবক, সম্পর্কে দুই ভাই আনোয়ার আলি ও জিন্নার আলি মেয়েকে কলেজে যাতায়াতের পথে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করত। সতর্ক করার পরেও অভিযুক্তেরা কথা শোনেনি বলে তাঁর দাবি। মঙ্গলবার পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলে রামপুরহাট থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে দুই ভাই। চিৎকার, চেঁচামেচিতে লোকজন ছুটে এলে অভিযুক্তেরা পালায়।
নিগৃহীতার বাবার কথায়, ‘‘সোমবার রাতের বেলায় মেয়ের চিৎকার শুনে বেরিয়ে আনোয়ার আর জিন্নারকে দেখতে পাই। তখনও বুঝিনি ওরা কী করেছে। ধরতে যেতেই আমার নাকে ঘুষি মেরে পালিয়ে যায়।’’
দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, অন্যতম অভিযুক্ত জিন্নারের বিরুদ্ধে আগেও নানা অপরাধের নজির রয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা পলাতক। ওদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ যে ঘরে ওই কলেজ ছাত্রী শুয়ে ছিলেন তার পাশেই ছিল জানলা। সেই খোলা জানলা দিয়েই অভিযুক্তেরা অ্যাসিড ছোড়ে বলে অভিযুক্তদের দাবি।
কখনও বারুইপুর, কখনও ক্যানিং। আবার কখনও পূর্বস্থলি বা ঘাটাল। একের পর এক অ্যাসিড হামলার ঘটনায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাচ্ছে তরুণী, কিশোরীদের মুখ-সহ সারা শরীর। তবু অ্যাসিড হামলায় রাশ টানতে পারছে না পুলিশ-প্রশাসন। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে এ রাজ্যে অ্যাসিড হামলার ঘটনা বেড়েছে।
শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেই গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অ্যাসিড আক্রান্তের সংখ্যা সাত। আর প্রতি ক্ষেত্রেই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠছে, এত সহজে সাধারণ মানুষের হাতে অ্যাসিড পৌঁছচ্ছে কী করে? কেউ পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি নেই বলে অভিযোগ করছেন। কেউ আবার বলছেন, সচেতনতার অভাবের কথা। অনেকে আবার মনে করছেন, দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলেই এমন অপরাধ কমানো যেতে পারে।
পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, দোষীদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy