Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সিউড়িতে আটক ব্যবসায়ী ও সঙ্গী

পুলিশকে পচা মাংস বিক্রির অভিযোগ

মহম্মদবাজারের পটেলনগর বাসিন্দা পেশায় পুলিশকর্মী কল্যাণ চক্রবর্তী বর্তমানে হুগলিতে কর্মরত। ছুটিতে এসে, মঙ্গলবার স্ত্রী তিথি চক্রবর্তীকে নিয়ে সিউড়ি এসেছিলেন কল্যাণবাবু। ফেরার পথে মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ সিউড়ি বেণীমাধব মোড় সংলগ্ন এক মাংস বিক্রেতার থেকে ৫০০ গ্রাম খাসির মাংস কেনেন। সেই মাংসই পচা বলে অভিযোগ তুলেছেন দম্পতি।

নালিশ: কৌটোতে ‘পচা’ মাংস। বুধবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নালিশ: কৌটোতে ‘পচা’ মাংস। বুধবার সিউড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০১:১৩
Share: Save:

জনমানসে ভাগাড়-কাণ্ডের স্মৃতি এখনও টাটকা। তার মধ্যেই বীরভূমের জেলাসদর সিউড়িতে পচা মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠল। বুধবার সকালের ঘটনা। সিউড়ি পুর এলাকার বেণীমাধব মোড় এলাকার এক মাংস বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মহম্মদবাজারের এক দম্পতিকে পচা মাংস বিক্রি করেছিলেন। অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ও তাঁর সঙ্গীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ তদন্ত করছে।

মহম্মদবাজারের পটেলনগর বাসিন্দা পেশায় পুলিশকর্মী কল্যাণ চক্রবর্তী বর্তমানে হুগলিতে কর্মরত। ছুটিতে এসে, মঙ্গলবার স্ত্রী তিথি চক্রবর্তীকে নিয়ে সিউড়ি এসেছিলেন কল্যাণবাবু। ফেরার পথে মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ সিউড়ি বেণীমাধব মোড় সংলগ্ন এক মাংস বিক্রেতার থেকে ৫০০ গ্রাম খাসির মাংস কেনেন। সেই মাংসই পচা বলে অভিযোগ তুলেছেন দম্পতি। কল্যাণবাবু ও তিথিদেবীর অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার রাতে মাংস রান্না হয়নি। কাঁচা মাংস টিফিন কৌটোয় ভরে ফ্রিজারে রেখেছিলাম। সকালে রান্না করতে গিয়ে দেখি পোকা থিক থিক করছে। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে সিউড়ির ওই দোকানে আসি।’’ দম্পতির সংযোজন, ‘‘দোকানদার তর্ক না করে টাকা ফেরত দেয়। কিন্তু, এ কাজ ফের হতে পারে ভেবে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সিউড়ি থানায় নালিশ জানাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আসে।’’

মাংস ব্যবসায়ী শেখ দুলু মেনেছেন, মঙ্গলবার সকালের মাংস তিনি ওই দম্পতিকে দিয়েছিলেন। কিন্তু, ফ্রিজারে রাখার পরেও পচন কী ভাবে ধরল বা পোকা হল, তা তিনি জানেন না। সিউড়ি ‘ডি’ ক্যাটেগরির পুরসভা। সিউড়ি পুরসভার নথি অনুযায়ী, হোটেল, রেঁস্তোরা, স্থায়ী অস্থায়ী খাবার দোকান, ফাস্ট ফুডের দোকান ধরলে খাবারের দোকানের সংখ্যাটা প্রায় দুশো। খাসি ও মুরগির মাংস বিক্রি হয় শতাধিক দোকান থেকে। পুরবাসীর দাবি, ভাগাড়-কাণ্ডের কিছু দিন পর থেকে জেলাসদরে এত সংখ্যক খাবারের দোকানে কেমন মাংস ব্যবহার হচ্ছে বা বিক্রি হচ্ছে, বেশ কয়েক দিন হোটেল রেঁস্তোরা সহ বিভিন্ন খাবার দোকান ও মাংসের দোকানে নজরদারি চললেও বর্তমানে কিছুটা হলেও ঢিলেমি দিয়েছে পুরসভা। যৌথ অভিযানে থাকার কথা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, সেখানে কোথাও একটা ফাঁক থাকছে তা শহরে পচা মাংস বিক্রির অভিযোগ থেকেই স্পষ্ট।

সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘পচা মাংস বিক্রির খবর আমাদের কাছে পৌঁছেছে। নজরদারি চলছে না এই অভিযোগ ঠিক নয়। তবে সেটা তা আরও জোরদার করা হবে।’’ পুরপ্রধানের সংযোজন, এলাকায় বেশ কিছু দোকান রয়েছে, যাদের বৈধ লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স ছাড়া মাংস বিক্রি নয়, এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান থেকে মাংস বিক্রি হলে সেই দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ বার থেকে এই বিষয়টা আবশ্যিক করতে চাই। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘ভাগাড় কাণ্ডের পরে এলাকার বিভিন্ন মাংসের দোকান থেকে মাংসের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠাতে হয়। আমরা প্রতি মাসেই সেটা পাঠাই। তবে বুধবারের অভিযোগের পরে শহর জুড়ে অভিযান চালাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rotten Meat Carcass Meat Dumping Yard
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE