Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাঘ না বাঘরোল, ধন্দ

সিউড়িঘেঁষা গরুঝোড়া গ্রামে গ্রামবাসীদের বাঘ আতঙ্ক কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বন দফতর। রবিবার ওই গ্রামে থাকা পায়ের ছাপ দেখে  বনকর্তারাও মনে করছেন, ‘বিগ-ক্যাট’ প্রজাতির কোনও প্রাণী এলাকায় ঢুকেছে।

অনুসন্ধান: ‘বাঘের’ খোঁজে গরুঝোরা গ্রামে বন দফতরের আধিকারিক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

অনুসন্ধান: ‘বাঘের’ খোঁজে গরুঝোরা গ্রামে বন দফতরের আধিকারিক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৫৭
Share: Save:

‘বাঘ’ ধরতে এ বার ছাগলের টোপ দিয়ে সিউড়ির গ্রামে খাঁচা পাতার কথা ভাবছে বন দফতর।

সিউড়িঘেঁষা গরুঝোড়া গ্রামে গ্রামবাসীদের বাঘ আতঙ্ক কাটাতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বন দফতর। রবিবার ওই গ্রামে থাকা পায়ের ছাপ দেখে বনকর্তারাও মনে করছেন, ‘বিগ-ক্যাট’ প্রজাতির কোনও প্রাণী এলাকায় ঢুকেছে।

জেলার এডিএফও বিজনকুমার নাথও এ দিন ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘একটা কোনও প্রাণী এসেছে বলে মনে হচ্ছে। মাটিতে পায়ের ছাপও মিলেছে। তবে সেই ছাপ নরম মাটিতে থাকায় নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এডিএফও জানান, চিতাবাঘ, বাঘরোল, জঙ্গলি বিড়াল ও বাঘের ছবি গ্রামবাসীদের দেখানো হয়েছিল। এক এক জন এক একটি প্রাণীকে চিহ্নিত করছেন। তাই বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

সিউড়ি ১ ব্লকের মল্লিকপুর গ্রামপঞ্চায়েতের গরুঝোড়া খাদিমপাড়া এলাকায় বাঘের আতঙ্ক ছড়ায় শুক্রবার রাত থেকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দিন সন্ধেয় গ্রামের একটি বাড়ির উঠোনে কোনও বড় জন্তু দেখেছিলেন এক যুবক। তাঁর দাবি ছিল, লাফিয়ে উঠোনের পাঁচিল টপকে চয়ে যায় প্রাণীটি। সেটির গা ছিল ডোরাকাটা। ‘বাঘ’ দেখার দাবি করেছিলেন ওই যুবকের আত্মীয়াও।

এর পর থেকেই আতঙ্ক ছড়ায়। গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ ও বনকর্মীরা। কিন্তু শুক্রবার রাত এবং পর দিন বিকেল পর্যন্ত ‘বাঘ’-এর দেখা পাননি ৮০টি পরিবারের ওই গ্রামের কেউ। পায়ের ছাপ একটা মিলেছিল বটে, কিন্তু ভিড়ের জন্য সে ছাপ দেখে কিছু বোঝা সম্ভব হয়নি।

কিন্তু শনিবার রাতে ফের বাঘ দেখা গিয়েছে বলে রব ওঠে। শেখ আলমগীর নামে এক যুবক দাবি করেন তাঁর গোয়াল ঘরে বাঘ ঢুকেছিল। আতঙ্কে রাতভর মশাল ও আগুন জ্বেলে পাহারা দেন গ্রামের লোক। ফের সেচ খালের ধারে ‘বাঘ’-এর দেখা মিলেছে বলে রবিবার দাবি করেন এক মহিলা ও দু’চার জন পুরুষ। কেউ কেউ বলছেন— বাঘের বাচ্চা। তার পর থেকেই ফের আতঙ্ক জঁকিয়ে বসেছে।

এলাকার নবনির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মকিম অবশ্য বলছেন, ‘‘গ্রামবাসীরা দাবি করলেও এখানে বাঘ আসবে কী করে! বড়বিড়াল জাতীয় কিছু হবে।’’ ওই কথায় অনেকে একমত হলেও আতঙ্ক কাটছে না। বিশেষ করে রাতে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে চাইছেন না।

বন দফতরের কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, বাঘরোল হতে পারে। কারণ এরা সাধারণ বিড়ালের তুলনায় আকারে প্রায় তিন গুণ। গড় আয়ু ১২ থেকে ১৫ বছর। এক ঝলক দেখলে বাঘরোল বা মেছো বেড়ালকে ছোট বাঘ বলে ভুল করা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু মেদিনীপুরে রয়েল বেঙ্গল বের হওয়ার পরে, এই এলাকায় বাঘরোলই ঢুকেছে, নাকি অন্য কোনও প্রাণী সেটা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না বনকর্তারাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Confusion Tiger Fishing Cat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE