Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

দোকান খুলছে, বহাল বিভ্রান্তিও

পুরসভার সেই ঘোষণার পরেই শহরে দোকানপাট খুলতে শুরু করে।

সিউড়িতে একটি বহুতল বিপণি খোলা নিয়ে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র

সিউড়িতে একটি বহুতল বিপণি খোলা নিয়ে উত্তেজনা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৩:৪০
Share: Save:

পুরসভা দোকান খোলার অনুমতি দিয়ে মাইকিং করল। তা শুনে সিউড়ি শহরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়াও বেশ কিছু দোকান খুলল মঙ্গলবার। তার পরে প্রশাসনের ‘নির্দেশে’ মাইকিং বন্ধ হয়ে গেল। দোকানও বন্ধ হল। জেলায় দোকান খোলা নিয়ে এখনও কতটা ধোঁয়াশা রয়েছে, তার নমুনাও মিলল।

মঙ্গলবার সকালে পুরসভার পক্ষ থেকে শহর জুড়ে মাইকিং করে প্রচার করা হয় যে, পুরসভা, জেলা প্রশাসন এবং অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে আজ থেকে দোকান খোলা যাবে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে, সঙ্গে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, সেই দিক নজরে রাখবে পুরসভা। কোনও দোকানদার স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান খুললে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রচার করা হয়।

পুরসভার সেই ঘোষণার পরেই শহরে দোকানপাট খুলতে শুরু করে। কিন্তু, কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরসভার মাইকিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেটি নিয়েই ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সিউড়ির ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিষাণ পাল বলেন, ‘‘পুরসভার মাইকিং শুনে এ দিন অনেকেই দোকান খুলেছিলেন। কিন্তু, আমরা খবর পাই যে, প্রশাসন সেই মাইকিং বন্ধ করে দিয়েছে। এর পরেই আমরা সদর মহকুমাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এখনও পর্যন্ত দোকান খোলার অনুমতি প্রশাসন দিচ্ছে না।’’

এ দিন সকালেই সিউড়ি পোস্ট অফিসের সামনে একটি বহুতল বিপণি খোলে। এক জন ক্রেতাকেও ভিতরে দেখা যায়। তার জেরে ওই বিপণির সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশ। প্রায় আধঘণ্টা ওই বিক্ষোভ চলে। পরে ওই বিপণির শাটার বন্ধ করে দেওয়া হলে বিক্ষোভ ওঠে। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, প্রশাসনের যদি অনুমতিই না থাকে, তা হলে ওই বিপণি খোলে কী ভাবে? বিপণির পক্ষ থেকে স্টোর ম্যানেজার সুব্রত বিশ্বাস দাবি করেন, সোমবার রাতে তাঁর কাছে কলকাতা অফিস থেকে খবর আসে, আগামী দু’দিনের মধ্যে দোকান খোলা যাবে। তাই এ দিন বিপণি খোলা হয়েছিল স্যানিটাইজ় করার জন্য। তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

দোকান-বিভ্রান্তি নিয়ে সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আলোচনা সাপেক্ষেই শহরে দোকান খোলার জন্য বলা হয়েছে। সেই মর্মেই মাইকিং হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন এটিকে অফিশিয়ালি করতে চাইছে না বলে পরে মাইকিং বন্ধ করা হয়। তবে দোকান খোলা হবে।’’ প্রশাসন এবং পুরসভার এই ‘সমন্বয়হীনতা’র মাঝে পড়ে বিপাকে শহরের ব্যবসায়ীরা। তাঁদের প্রশ্ন, পুরসভার কথা মতো দোকান খোলার পরে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীকে আটক করে নিয়ে যাবে না—এই নিশ্চয়তা কি আছে?

সিউড়িতে দোকান-বিভ্রান্তি বহাল থাকলেও এ দিন বোলপুরে ছিল অন্য ছবি। অনেক দোকানই সেখানে খুলেছে। এমনকি শহরের ফুটপাতেও কিছু জনকে জামাকাপড় বিক্রি করতে দেখা যায়। যদিও প্রশাসনের তরফে দোকান খোলা নিয়ে এখনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘২১ তারিখ থেকে মুখ্যমন্ত্রী দোকানপাট খুলতে বলেছেন। তাই এ দিন কয়েক জন ব্যবসায়ীরা দোকান খুলেছিলেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য। তবে বেচাকেনা হয়নি।’’

ছবিটা আলাদা নয় রামপুরহাট শহরেও। বহু দোকান এ দিন খুলেছে। ক্রেতার ভাল ভিড় চোখে পড়েছে জামাকাপড় ও জুতোর দোকানে। ইদের জন্য কেনাকাটা সারতে শহরে এসেছিলেন অনেক মানুষ। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। দফারফা হয়েছে পারস্পরিক দূরত্ব-বিধিরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE