Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Labpur

কেন খুন সহদেব, কাটছে না ধোঁয়াশা

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুর থানার বাঘা গ্রামে সহদেবের বাড়ি।

শোকার্ত পরিজনেরা। লাভপুরের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিজনেরা। লাভপুরের গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৯
Share: Save:

কেন খুন হতে হল সহদেব বাগদিকে—এই প্রশ্নের উত্তর লাভপুরের ওই তৃণমূল কর্মীর দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টা পরেও মেলেনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতের পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে খুনের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। তৃণমূল এই ঘটনায় বিজেপি-কে দায়ী করলেও সহদেব দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাভপুর থানার বাঘা গ্রামে সহদেবের বাড়ি। শনিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ি থেকে কিলোমিটার দুয়েক দূরে মাঠের মধ্যে তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁর গলা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চোট ছিল। সহদেব ছিলেন তৃণমূলের বুথ কমিটির সদস্য তথা ঠিবা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। তাঁর মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে।

ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত সহদেব দলের জন্মলগ্ন তৃণমূলে রয়েছেন বলে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের দাবি। তাঁকে খুনের কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউ। রবিবার বাঘা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল ইতস্তত জটলা। খুন নিয়ে নিচু গলায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করলেই চুপ। অধিকাংশই বলে দেন, ‘‘আমরা কিছু বলতে পারব না। ওদের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।’’

নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল কপাল চাপড়াচ্ছেন স্ত্রী ছায়াদেবী। প্রতিবেশীরা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কেঁদে কেঁদে গলা বসে গিয়েছে তার। দলের নেতাদের সুরেই তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার স্বামী এখানে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিল। সেই ক্ষমতা ধরে রেখেছিল বলেই বিজেপির লোকেরা ওকে খুন করেছে।’’

গ্রামে কান পাতলে অবশ্য অন্য কথাও শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ জানালেন, তৃণমূলে এখন সিপিএম-সহ বিভিন্ন দল থেকে আসা লোকেরা জায়গা করে নিয়েছে। তারা ক্ষমতার রাশ নিজেদের হাতে নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। অন্য দিকে সহদেবের নেতৃত্বে পুরনো তৃণমূল কর্মীরা এককাট্টা হয়ে উঠেছে। সেই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চাপা বিরোধ ছিল। সেই দাবির পক্ষেই সওয়াল করেছেন বিজেপি-র স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি নিহত ব্যক্তি ভালমানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। দলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।’’

আবার কারও কারও দাবি, লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে সহদেব বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিলেন তিনি। সেই কারণে দলের একাংশের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। যদিও জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহের বক্তব্য, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিংবা বিজেপি-র দিকে ঝোঁকার তত্ত্ব ভিত্তিহীন। নিহত বরাবরই আমাদের দলের একনিষ্ঠ সংগঠক। বিজেপি অভিযোগের মুখ উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিতে মিথ্যা কথা বলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Labpur Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE