Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কর্নিয়া নিতে যানজট পেরিয়ে গ্রামে গাড়ি

দুর্গাপুর থেকে জাতীয় সড়ক ধরে প্রায় ১৬৬ কিলোমিটার পথ ও যানজট পেরিয়ে কুরুমগ্রামে গ্রামে পৌঁছে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে পেরে উৎসাহিত দুর্গাপুরের ব্লাইন্ড সোসাইটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৮
Share: Save:

জাতীয় সড়ক থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের গ্রাম। দুর্গাপুর থেকে জাতীয় সড়কে যানজট আছে জেনেও মায়ের অন্তিম ইচ্ছে পূরণ করায় পিছিয়ে যাননি দুই ছেলে। আর পিছিয়ে যাননি বলেই নলহাটি থানার কুরুমগ্রামের বৃদ্ধা প্রণতি মজুমদারের দু’টি কর্নিয়া কাজে লাগল। যা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হবে। গ্রামাঞ্চলেও যে চক্ষুদানের জন্য মানুষ এগিয়ে আসছেন, সেটা দেখে খুশি কর্নিয়া সংগ্রহের কাজের সঙ্গে যুক্ত সংস্থার সদস্যেরা।

রামপুরহাট শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরত্বের গ্রাম কুরুমগ্রাম। সেই গ্রামের ৭৫ বছরের প্রণতিদেবী দীর্ঘ রোগভোগের পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে মারা যান। তাঁর বড় ছেলে কাজল মজুমদার জানান, মা অসুস্থ থাকাকালীন মাস খানেক আগে চক্ষুদানের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। সেই মতো তাঁর ভাই চঞ্চল রামপুরহাটের একটি সংস্থার মাধ্যমে দুর্গাপুর ব্লাইন্ড সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কাজলবাবুর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার রাত তিনটে নাগাদ মা মারা যাওয়ার পরে রামপুরহাটের ওই সংস্থার মাধ্যমেই দুর্গাপুর ব্লাইন্ড সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দুর্গাপুর থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে তাঁরা কর্নিয়া সংগ্রহ করেন। মায়ের অন্তিম ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে ভাল লাগছে।’’

দুর্গাপুর থেকে জাতীয় সড়ক ধরে প্রায় ১৬৬ কিলোমিটার পথ ও যানজট পেরিয়ে কুরুমগ্রামে গ্রামে পৌঁছে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে পেরে উৎসাহিত দুর্গাপুরের ব্লাইন্ড সোসাইটি। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক কাজল রায় বলেন, ‘‘খবর পেয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে গ্রামে পৌঁছনো যায়, তার জন্য চেষ্টা চালিয়েছেন আমাদের সদস্যেরা। তাঁদের সেই চেষ্টা শেষ পর্যন্ত কাজে এসেছে।’’

গ্রামে এই প্রথম এক জন চক্ষুদান করায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। কুরুম গ্রামের সমাজকর্মী সঞ্জীব সিংহ, যুবক শৌভিক মণ্ডল জানান, আগামী দিনে যাতে এই গ্রাম থেকে আরও অনেকে চক্ষুদান করতে এগিয়ে আসেন, তার চেষ্টা করা হবে। কাজল রায় বলেন, ‘‘রামপুরহাট শহরে এর আগে কর্নিয়া সংগ্রহ করেছি। রামপুরহাট ছাড়িয়ে কাবিলপুর গ্রামের মতো প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষও চক্ষুদান করেছেন। আরও গ্রামের মানুষ এগিয়ে আসছেন এই মহৎ উদ্দেশ্যে, এটা ভেবেই আমরা গর্বিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Medical Opthalmology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE