দুই চিত্র: (বাঁ দিকে) সিউড়িতে দোকান খোলা নিয়ে ধন্দে সার দিয়ে বন্ধ দোকান। রুজির টানে দেড় মাস পর চায়ের দোকান খুলল বোলপুরে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
রাজ্য সরকারের নির্দেশ, ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ বা ‘একক’ দোকান খোলা যাবে। তেমন দোকান খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের আবেদন নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কোন কোন দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে সদর মহকুমাশাসকের তত্ত্বাবধানে গঠন করা হয়েছে পাঁচ জনের কমিটি। তার পরেও কেটে গিয়েছে প্রায় ১০ দিন। কিন্তু দোকান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন টালবাহানা করছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। সিউড়ি, সাঁইথিয়া, বোলপুর—সর্বত্রই দোকান খোলা নিয়ে ব্যবসায়ীরা ধোঁয়াশায় রয়েছেন।
সিউড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কিষান পাল এবং সাঁইথিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক টিকম চাঁদের ক্ষোভ, ‘‘কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের নির্দেশ পাওয়ার পরেও অত্যাবশকীয় পণ্য বাদে বেশ কিছু দোকান খোলার কথা ছিল। কিন্তু সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রশাসন ব্যর্থ। এমনকি আবেদন করতে বলে বৈঠক ডেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তারা কথা রাখতে পারেনি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সিউড়ি শহরে ইতিমধ্যেই আড়াইশোর বেশি দোকানদার আবেদন জানিয়েছেন। সেই মতো দোকান পরিদর্শন করেছে প্রশাসনের প্রতিনিধিদল। সব শেষে বিশেষ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে, কোন কোন দোকান খোলার অনুমতি পাবে। সূত্রের খবর, গত বুধবার বিকেলে ওই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল হয়। ফের কবে বৈঠক হবে, তা এখনও জানা যায়নি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘লকডাউনের চতুর্থ দফা শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। রাজ্য সরকার রেড জ়োনে কিছু ছাড়ের কথা ঘোষণা করে করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই অরেঞ্জ এবং গ্রিন জ়োনে আরও বেশি ছাড় থাকবে। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নবান্নের পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।’’
বোলপুর শহরেও কী কী দোকান খোলা থাকবে, তা নিয়ে ব্যবসায়ী সমিতি ও পুরসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে মহকুমাশাসক শুক্রবার বিকেলে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে কমিটি গঠন করে শহরে কী ধরনের কত সংখ্যক দোকান রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়। সেই তালিকা আগামী দু-একদিনের মধ্যে মহকুমাশাসকের দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রায় দু’মাস হতে চলল লকডাউন চলছে। বন্ধ হয়ে রয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বাদে অধিকাংশ দোকানপাট। এই অবস্থায় পেটের দায়ে দু-এক জন লুকিয়ে চুরিয়ে দোকান খোলার চেষ্টা করেছেন বটে। কিন্তু খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ এসে তা বন্ধ করেছে এবং দোকানদারদের আটক করে নিয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় মরিয়া হয়ে কিছু কিছু ব্যবসায়ী প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দোকান খুলছেন। যেমন শনিবার দেখা গেল বোলপুরে। কোথাও চা বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে, কোথাও বা অর্ধেক শাটার তুলে দোকান খোলা রাখার ছবি ধরা পড়েছে।
ব্যবসায়ী সমিতিগুলির অভিযোগ, রাজ্য সরকার ‘স্ট্যান্ড অ্যালোন’ দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে। তা সত্ত্বেও জেলা প্রশাসন কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না। অথচ অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পরিবার চলে ওই দোকানের উপরে নির্ভর করে। সিউড়ি শহরের একাধিক দোকানদারের বক্তব্য, ‘‘বেশ কয়েক দিন ধরেই শহরের রাস্তায় প্রচুর মানুষ বেরোচ্ছেন। অনেকে স্বাস্থ্যবিধিও মানছেন না। বাজারে প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে। তা হলে লকডাউন মানে কি কেবল দোকানপাট বন্ধ রাখা?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy