বৈঠকে: সিউড়িতে করোনা-মোকাবিলার প্রস্তুতি বৈঠকে হৃদেশ মোহন। নিজস্ব চিত্র
একটি গ্রামে যদি বেশি সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহল সেই গ্রামেটিকেই কোয়রান্টিন করার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করল বীরভূম প্রশাসন।
করোনা-প্রকোপ আরও বাড়লে যাতে গোটা ব্যবস্থাপনা ভেঙে না পড়ে, সেই প্রস্তুতিতে কেমন তৈরি হচ্ছে জেলা প্রশাসন, সে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখতে শনিবার জেলায় এসেছিলেন জেলার দায়িত্বে থাকা (নোডাল অফিসার) রাজ্য বন দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হৃদেশ মোহন। সিউড়ি প্রশাসন ভবনে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে বৈঠক শেষে প্রস্তুতি কেমন তারই ইঙ্গিত দিলেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।
জেলাশাসক জানান, ‘‘করোনা নিয়ে সরকারি যে নির্দেশাবলী ছিল সেগুলি গ্রাম থেকে জেলায় কেমন ভাবে পালিত হয়েছে সেটা জানার জন্য আজ উনি এসেছিলেন। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে একটি গ্রামকেও যেন কোয়রান্টিন গ্রামে পরিবর্তিত করতে পারি সে কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় যে কোয়রান্টিন সেন্টার রয়েছে, সেখানে যদি ১০০ জনকে রাখতে হয়, তাহলে তাঁদের যাতে যাতে পরিষেবা দিতে পারি সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।’’
করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রতিরোধে দেশ জুড়ে জরুরি ভিত্তিক প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে বাড়াবাড়ি হলে কেমন তৈরি জেলাপ্রশাসন, কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং আরও কী কী প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন রাজ্য বন দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হৃদেশ মোহনের এ দিনের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেটা দেখা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে প্রতিটি ব্লকে কম পক্ষে একটি করে কোয়রান্টিন সেন্টার গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যাতে যেখানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে এমন অনেক সংখ্যক মানুষকে রাখা যায়। তাঁদের খাবারের জোগান থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া যায় সে ব্যাপারে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, কিসান মান্ডি বা সরকারি আইটিআই গুলিকেকে চিহ্নিত করে রাখা এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা। যাতে তেমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে আক্রান্ত মানুষ বঞ্চিত না হল। জেলাশাসক ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ, অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) শুভাশিস বেজ-সহ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন আরও একটি বৈঠক হয় বেসরকারি নার্সিংহোম বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সঙ্গে যাদের পরিকাঠামো উন্নত। জেলার প্রায় ৩০টি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন। সরকারি হাসপাতালগুলির কী কী ধরনের ব্যবস্থা আছে, প্রয়োজনে সেগুলিকে ভেন্টিলেশন ও ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে পরিবর্তিত করতে হয় জেলা প্রশাসন বেসরকারি হাসপাতালের কাছে থেকে নেবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলি যাতে সাহায্য করতে পারে সে ব্যাপারে তাঁদের কাছে প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা শাসক বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছেন যে তাঁরা সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবেন।’’ জেলাশাসক জানান, জেলায় হোম কোয়রান্টিনে আছেন প্রায় ৮৬০ জন। এ ছাড়া দুটি জেলা ও একটি মহকুমা হাসপাতালে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে আছেন প্রায় ১২-১৩ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy