প্রতীকী ছবি
বিয়ে হবে। অথচ নিমন্ত্রিতরা পাত পেড়ে খাবেন না, আত্মীয়-পরিজন আসবেন না, তা কি হয়!
অতএব সরকারি নির্দেশকে তুড়ি মেরে লক-ডাউনের মধ্যেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিয়ের ঢালাও অয়োজন হয়ে চলেছে বলে অভিযোগ। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে তিন সপ্তাহের লক-ডাউন চলছে। তার মধ্যেই উদ্বেগ বাড়িয়ে চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের কানেই পৌঁছচ্ছে না বিয়ের খবর। অথচ নিমন্ত্রিত ও বড় ও কনে পক্ষের বহু মানুষ এক সঙ্গে জমায়েত হচ্ছেন। এই নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তারা চিন্তায় পড়েছেন। কারণ, ক’দিন আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াবাদের যে বৃদ্ধ করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সম্প্রতি এগরায় বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন কয়েক জন বিদেশিও। ওই অনুষ্ঠান থেকেই তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারই খয়রাশোলের বাবুইডোড় পঞ্চায়েতে এলাকায় বিয়ে করেন এক যুবক। শ’খানেক লোক নিমন্ত্রিত ছিলেন। কব্জি ডুবিয়ে চলল খাওয়াদাওয়া। লক-ডাউনের প্রথম দিন, ২৩ মার্চ খয়রাশোলের পাঁচড়া পঞ্চায়েতের ময়ূরাক্ষী কটন মিলের সামনে আর এক যুবকের বিয়ের বরযাত্রী যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিল কমপক্ষে আটটি গাড়ি। ওই দিনই চাইল্ড লাইন ও প্রশাসন দুই নাবালিকার বিয়ে আটকায়। একটি লাভপুরে, অন্যটি পাড়ুই থানা এলাকায়। দু’টি বাড়িতেই আয়োজন চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। ইলামবাজারের বিয়েতে নিমন্ত্রিত উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যও। প্রশাসনের তৎপরতায় বিয়ে দু’টি ভেস্তে যাওয়ার আগে পর্যন্ত জমায়েত ছিল ভালই। এগুলি উদাহরণ মাত্র।
অভিযোগ, গত কয়েক দিনে জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় এমন বেশ কিছু বিয়ে হয়েছে। কিছু বিয়ে অনাড়ম্বর ভাবে হলেও, বেশ কয়েকটিতে যথারীতি জমায়েত ছিল। পুলিশের একটা সূত্র জানাচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এলাকায় সমাজিক অনুষ্ঠান হলে, সে খবর থানা পর্যন্ত আসছে। আনাড়ম্বর ভাবে দু’চার জনের উপস্থিতিতেই চার হাত এক করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও দু-একটি ক্ষেত্রে হয়তো সেটা মানা হয়নি।
দুশ্চিন্তা সেখানেই। কারণ বীরভূম এমন একটি জেলা, যেখানে বিদেশ থেকে তো বটেই, করোনা-সংক্রমিত অন্য রাজ্য থেকে কয়েক হাজার মানুষ জেলায় ফিরেছেন ২৩ তারিখের আগে পর্যন্ত। সকলকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রাখার নির্দেশ থাকলেও সেটা কতটা মানা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাঁদের কেউ (হয়তো এখনও উপসর্গ ধরা পড়েনি) কেউ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। কারণ বিয়েবাড়িতে কে কোথা থেকে এলেন, তার হিসেব কে রাখেন?
যে উদ্দেশ্যে লক-ডাউনের ঘোষণা, এ ভাবে সামাজিক অনুষ্ঠান হতে থাকলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় থাকে কী করে— প্রশ্ন তুলছেন সচেতন মানুষ। তাঁদের কথায়, ‘‘আগে থেকে কথা দেওয়া থাকলে বিয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানটুকু হতেই পারে। কিন্তু সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে যাঁরা ভোজের আয়োজন করছেন, তাঁরা বুঝতে পারছেন না, একবার সংক্রমণ শুরু হলে শুধু তাঁরাই নন, এলাকার সব মানুষের সর্বনাশ হবে!’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এমন খবর এলেই পাত্র বা পাত্রী পক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, খুব বেশি হলে সাত-আট জনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান সারতে হবে। জমায়েত, ভোজের আয়োজন করা চলবে না। কোথাও বিচ্যুতি হয়েছে এমন খবর নেই।’’
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy