Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
 হুঁশিয়ারি দুই জেলা প্রশাসনের
Coronavirus

বেরোলে সরকারি কোয়রান্টিনে ঠাঁই

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার কথা, তাঁদের অনেকেই বাইরে বেরোচ্ছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এমনকি, বাজারহাট করছেন বলেও শুনেছি। সবার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এটা করা একেবারেই চলবে না।’’

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

নোভেল করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ রুখতে বাইরে থেকে আসা লোকজনকে ১৪ দিন বাড়ির বাইরে না বেরোনোর নির্দশে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগ উঠে আসছে দুই জেলার নানা জায়গা থেকে। সে কথা কানে আসার পরেই তৎপর হয়ে মাঠে নেমেছে স্বাস্থ্য দফতর এবং পুলিশ। নিয়ম না মানলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে পুরুলিয়ার নানা জায়গায়। পুরুলিয়া শহর ও অন্য কয়েকটি অঞ্চলে শনিবার পুলিশের রুট-মার্চও চোখে পড়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ার ও এনএম-দের কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার কথা, তাঁদের অনেকেই বাইরে বেরোচ্ছেন বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এমনকি, বাজারহাট করছেন বলেও শুনেছি। সবার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এটা করা একেবারেই চলবে না।’’ জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়ার কথায়, ‘‘এখন পরিস্থিতির গুরত্ব অনেককেই বারবার বলেও বোঝানো যাচ্ছে না। সামান্য ভুলের থেকে খুব সহজেই এই সময়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।’’

বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেছি, বাড়ি থেকে তুলে এনে এমন লোকজনকে একটা জায়গায় নজরে রাখা হোক।’’ শুক্রবারও পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়া কালিমন্দির এলাকা, চকবাজার, সাহেববাঁধ রোডের মতো কিছু জায়গায় দু’জনের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার বিধি অনেকেই উপেক্ষা করেছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে রকম জটলা চোখে পড়ছে, তা যথেষ্ট ঝুঁকির।’’ জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘কোনও কোনও জায়গা থেকে অভিযোগ আসছে। এ বার হোম কোয়রান্টিনে থাকা কাউকে বাইরে দেখা গেলে, সোজা কমিউনিটি কোয়রান্টিনে নিয়ে যাওয়া হবে।’’

বাঁকুড়া শহরের একটি এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তোলেন, সদ্য বিদেশ থেকে ফিরে আসা একই পরিবারের কয়েকজন হোম কোয়রান্টিনে না থেকে বাইরে বেরোচ্ছিলেন। এমনকি, হাঁটতেও যাচ্ছিলেন রোজ সকালে। খবর পেয়েই বাঁকুড়া পুরসভা থেকে প্রতিনিধিরা গিয়ে ওই পরিবারের লোকজনকে সতর্ক করে আসেন। বিষ্ণুপুরের একটি এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে, সদ্য কেরালা থেকে ফেরা এক যুবক পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আড্ডা দিচ্ছেন আশপাশে আত্মীয়দের বাড়িতে গিয়ে।

কিছু দিন আগেই নানা উপসর্গ নিয়ে সদ্য ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পাত্রসায়রের দুই বাসিন্দাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের ‘আইসোলেশন’-এ ভর্তি করানো হয়। লালা-রস পরীক্ষা করে তাঁদের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি বলে দাবি করছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তবে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে হোম কোয়রান্টিনে থাকাকালীন পাত্রসায়রের অনেকেই বাইরে ঘোরাফেরা করছেন বলেও অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

বাঁকুড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন জানান, ‘হোম কোয়রান্টিন’ থাকা লোকজন যাতে বাড়ির বাইরে না যান, সে দিকে নজর রাখছেন সিভিক ভলান্টিয়ার, আশাকর্মী বা এএনএম-রা। তিনি বলেন, ‘‘হোম কোয়রান্টিনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের আমরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছি, নিয়ম ভেঙে কেউ বাইরে গেলে সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে এনে রাখা হবে।”

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেবল বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলাতেই ১১,২৫৭ জনকে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ রাখা হয়েছিল। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) নিলয় চক্রবর্তী জানান, ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা লোকজন যাতে বাড়ির বাইরে না যান তার জন্য পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর যৌথভাবে নজরদারি চালাচ্ছে।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্দেশ অমান্য করে কেউ বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন বলে কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE