প্রতীকী ছবি।
কাজ না করেই ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে লক্ষাধিক টাকা ‘গায়েব' করার মতলব ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু, ‘ভুয়ো’ মাস্টার রোলে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সই করতে না চাওয়ায় সেই ‘দুর্নীতি’ রুখে দেওয়া গিয়েছে। প্রধানকে কৃতিত্ব দিলেও সম্প্রতি সিউড়ি ১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন একটি ঘটনা সামনে আসায় অস্বস্তিতে শাসকদল। ঘটনার নেপথ্যে যে বা যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি তৃণমূলের। ঠিক কী হয়েছিল, বিশদে জানতে গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন বিডিও।
১১টি সংসদ বিশিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত মল্লিকপুর। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, চন্দপুর সংসদে একটি নিকাশি নালা সংস্কারের জন্য শতাধিক জবকার্ডধারীকে পাঁচ দিনের কাজ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানের কাছে মাস্টার রোল সই করাতে এসেছিলেন স্থানীয় জব সুপারভাইজ়ার ও তাঁর এক সঙ্গী। মাস্টার রোল অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কাজ দেখানো হয়েছিল। বরাদ্দ ছিল ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু। প্রধান খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এক ছটাকও কাজ হয়নি। ফলে তিনি মাস্টার রোলে সই করতে চাননি।
অভিযুক্ত জব সুপারভাইজ়ারের সঙ্গে যোগায়োগ করা যায়নি। তবে তৃণমূলের সিউড়ি ১ ব্লক সভাপতি স্বর্ণশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘যে বা যারাই থাকুক, দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পাবে না।’’ বিডিও শিবাশিস সরকার বলেন, ‘‘রিপোর্ট পাই, তার পর সিদ্ধান্ত। তবে এ ক্ষেত্রে কাজ বাতিল বলে গণ্য হবে। টাকাও কেউ পাবেন না।’’ তিনি জানান, যে-সব জবকার্ডধারীর নাম ওই মাস্টার রোলে রয়েছে তাঁদের তিন দিন অনুপস্থিত দেখানো হবে। তাঁরা ভবিষ্যতে তিন দিন কম কাজ পাবেন।
প্রশ্ন উঠছে, মাস্টার রোল জেনারেট করার আগে অন্তত ১০টি ধাপ পেরোতে হয়। এতগুলি ধাপ নির্বিঘ্নে পেরনো গেল কী ভাবে? বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘এতে আর আশ্চর্য কী! যে কোনও সরকারি প্রকল্প থেকে দুর্নীতি করা শাসকদলের মজ্জাগত। জেলা জুড়ে এমন কাণ্ড চলছেই। এ ক্ষেত্রে প্রধান সই না করার পিছনে অন্য সমীকরণ আছে কিনা, দেখা দরকার।’’
বিজেপির কটাক্ষ উড়িয়ে মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুমার দে বলছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ঘটনা। তখন তিন দিন কাজ হয়েছে বলা হচ্ছিল। কিন্তু, ওখানে কোনও কাজ হয়নি জেনেও ওই মাস্টার রোলে সই করার অন্যায় করতে পারিনি।’’ সিউড়ি বিধানসভার তৃণমূলের পর্যবেক্ষক বিকাশ রায়চৌধুরীর মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতি বরদাস্ত করা যাবে না। এমনটা হয়ে থাকলে অন্যায়ের পিছনে যারা জড়িয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, প্রধানের সতর্কতা এবং সততা সাধুবাদযোগ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy