প্রতীকী ছবি
করোনা-পরীক্ষার গতি বাড়াতে বাঁকুড়া মেডিক্যালে টেকনিশিয়ানের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। রাজ্যের তরফে নতুন করে একটি ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্রও দেওয়া হচ্ছে বাঁকুড়া মেডিক্যালকে। এতে বাঁকুড়া মেডিক্যালের করোনা পরীক্ষাগারের পরিকাঠামো অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে বলে দাবি করছেন স্বাস্থ্য-কর্তারা।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধানের কথায়, “চলতি সপ্তাহেই একটি অটো এক্সট্রাক্টর মেশিন রাজ্যের তরফে আমাদের দেওয়া হয়েছে। এই মেশিনে করোনা পরীক্ষার আংশিক পর্যায় স্বয়ংক্রিয় ভাবেই হয়ে যায়। ফলে, পরীক্ষার কাজে গতি এসেছে। নতুন করে একটি আরটি-পিসিআর যন্ত্র এবং করোনা পরীক্ষার জন্য জরুরি একটি সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রও দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, চার জন টেকনিশিয়ানও বাড়ানো হচ্ছে। এতে করোনা-পরীক্ষায় আরও গতি বাড়বে।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে বাঁকুড়া মেডিক্যালে দু’টি ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্র রয়েছে। টেকনিশিয়ান রয়েছেন ন’জন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৮০০টি করোনা-রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে বাঁকুড়া মেডিক্যালে। ফলে, যন্ত্র ও টেকনিশিয়ান বাড়ানোর দরকার রয়েছে বলে দাবি করছেন হাসপাতালের কর্তারা। হাসপাতালের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, দুর্বল পরিকাঠামোর জন্য পরীক্ষাগারের কর্মীদের অনেক সময় মাঝরাত পর্যন্ত বাড়তি কাজ করতে হচ্ছে।
তবে ‘আরটি-পিসিআর’ যন্ত্র ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ করলেই পরিকাঠামোগত সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না বলে জানাচ্ছেন হাসপাতালের আধিকারিকদের একাংশ। তাঁরা জানান, এই মুহূর্তে বাঁকুড়া মেডিক্যালের করোনা পরীক্ষাগারে মোট তিনটি ‘বায়োসেফটি ক্যাবিনেট’ রয়েছে। সেগুলির মধ্যেই যন্ত্রগুলি রেখে লালারসের নমুনার পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার হার যতই বাড়ছে, ‘বায়োসেফটি ক্যাবিনেট’-এর চাহিদাও ততই বাড়ছে। সমস্যার কথা মেনে নিচ্ছেন অধ্যক্ষও। তিনি বলেন, “রাজ্যের তরফে নতুন করে আরও একটি বায়োসেফটি ক্যাবিনেট বাঁকুড়া মেডিক্যালের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে এখনও তা হাতে পাইনি।”
এই পরিস্থিতিতে ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় থাকা একটি ‘বায়োসেফটি ক্যাবিনেট’ বাঁকুড়া মেডিক্যালের পরীক্ষাগারে নিয়ে এসে কাজে লাগানোর বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। অধ্যক্ষ বলেন, “ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা ওই বায়োসেফটি ক্যাবিনেটের হাল কেমন, তা আমাদের জানা নেই। সেটি নিয়ে আসার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।”
গত ২২ মে থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে করোনা-পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তার আগে জেলার মানুষের করোনা-পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ বা কলকাতার নানা পরীক্ষাগারে পাঠানো হত। বাঁকুড়া মেডিক্যালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরে রিপোর্ট মিলছে দ্রুত। পাশাপাশি, জেলায় পরীক্ষার পরিমাণও বেড়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনা-পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে বাঁকুড়া মেডিক্যালের আগেই কলকাতা মেডিক্যাল ও এনআরএস মেডিক্যালে করোনা পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাঁকুড়া মেডিক্যালে মোট ২৫,০২৫টি করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। পরে পরীক্ষা শুরু হলেও রিপোর্টের নিরিখে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ (২১,১৯৫) ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে (১২,৭৩৯) পিছনে ফেলে দিয়েছে বাঁকুড়া। অধ্যক্ষ বলেন, “সীমিত পরিকাঠামো হলেও হাসপাতালের কর্মীদের ঐকান্তিক চেষ্টায় ক্রমশ পরীক্ষার গতি বাড়ছে।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy