প্রতীকী ছবি।
বিজেপির রথ, শাসকদলের খোল-খঞ্জনি। দু’দলের কর্মসূচি নিয়ে লোকসভা ভোটের অনেক আগেই রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে জেলায়। শাসক ও বিরোধীর মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধও।
দু’পক্ষের মোকাবিলায় ছয় কষছে বামেরাও। গত সেপ্টেম্বরে লং-মার্চ কর্মসূচির পরে এ বার ‘সম্প্রীতি যাত্রা’র প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা বামফ্রন্ট। জেলা বামফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ ডিসেম্বর সম্প্রীতি যাত্রা হবে তারাপীঠের ফুলিডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে রামপুরহাট পাঁচ মাথা মোড় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তায়। থাকবেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। বামেদের দাবি, রাজ্য ও জেলার নেতারা তো থাকবেনই, সম্প্রীতি যাত্রায় ২০ হাজার মানুষের ভিড় জমতে পারে। জেলা বামফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্য, লং মার্চে ভাল সাড়া মিলেছিল। আগামী মাসের মহামিছিলের জন্য জেলার প্রতিটি ব্লকে গ্রামসভা, কর্মিসভা ও দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করবে যুব সংগঠনগুলিও।
বাম নেতৃত্ব মানছেন, গত ৫ বছরে নানা কারণে জেলায় ধীরে ধীরে তাঁদের সংগঠন দুর্বল হয়েছে। সময়ে পাশে দাঁড়াতে না পারায়, এক সময় যে কৃষক-শ্রমিক-সাধারণ মানুষ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই উপায় না পেয়ে অন্য দলের দিকে ঝুঁকছেন। গত বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় শাসকদলের ‘উন্নয়ন’ ঠেলে ৮০ শতাংশ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী দিতে না পারাও হতাশাজনক। বামফ্রন্ট সূত্রে খবর, সংগঠন মজবুত করতে, মানুষকে পাশে নিয়ে মানুষের হয়ে আন্দোলনে নামতে লং-মার্চ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। এ বারও লক্ষ্য এক। সঙ্গে মেরুকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধেও আওয়াজ তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
রামপুরহাট থেকেই বিজেপি রথ বের করবে বলে ঘোষণা করেছে। সেই শহরেই সম্প্রীতি যাত্রার পিছনে কী কোনও কারণ রয়েছে?
সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘আগামী মাসের ৫, ৭ ও ৯ রাজ্যের তিনটি প্রান্তে (তার মধ্যে এ জেলা থেকে একটি) রথযাত্রা ঘিরে নতুন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কা আরও প্রকট, কারণ প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে সেই রাষ্ট্রীয় সাম্প্রদায়িকতাকে রোখার চেষ্টা করছে শাসকদল।’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘দু’টি রাজনৈতিক দলের মেরুকরণের রাজনীতির বিপদের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই সম্প্রীতি পদযাত্রা।’’
এ নিয়ে তৃণমূল নেতা তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ওঁদের অস্তিত্ব এখন শুধু টিকে রয়েছে কাগজে, টেলিভিশনে। মানুষের সঙ্গে ওঁদের কোনও যোগ নেই বলেই এমন উদ্ভট কথা বলছে। আমাদের সঙ্গে মানুষ রয়েছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই স্পষ্ট, আগামী নির্বাচনেও একই ফল হবে। আমরা ওই যাত্রায় গুরুত্বই দিচ্ছি না।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কথায়, ‘‘রথযাত্রার আসল উদ্দেশ্য কী জানে বামফ্রন্ট? এ রাজ্য গণতন্ত্র বিপন্ন। সেই গণতন্ত্রকে বাঁচানোর ডাক ও নরেন্দ্র মোদী সরকারের জনমুখী নীতি তুলে ধরাই রথযাত্রার উদ্দেশ্য। এখানে সম্প্রীতি বিঘ্নিত হওয়ার প্রশ্ন কোথায় আসছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy