Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

চাষের কফিনে শেষ পেরেক

ব্যাপক  ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সিমলাপাল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। 

ভেজা ধান নিয়ে বাড়ির পথে। বোরোর নিমডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

ভেজা ধান নিয়ে বাড়ির পথে। বোরোর নিমডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০০:০৩
Share: Save:

এক সপ্তাহ আগে আমপানে ৩৪৬ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছিল বাঁকুড়ায়। বুধবার কালবৈশাখী যেন কফিনে শেষ পেরেক পুঁতল। বাঁকুড়া জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। বিষ্ণুপুরের মহকুমা কৃষি অধিকর্তা হেমন্তকুমার নায়েক জানান, বুধবার সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কোতুলপুর ব্লকে। ৭২.২ মিলিমিটার। বোরো ধান যাঁরা কাটতে দেরি করেছেন বা যাঁদের ধান এখনও মাঠে রয়েছে, ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আনাজেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তিনি জানান, এই পরিস্থিতিতে আনাজ গাছের গোড়ার জল বার করে দিয়ে জলের মধ্যে লিটারে চার গ্রাম করে কপার অক্সিক্লোরাইড মিশিয়ে ছেটানো দরকার। এতে ছত্রাকঘটিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

কোতুলপুরের দারাপুর গ্রামের জয়ন্ত বন্দোপাধ্যায়, সমরেশ রায় বলেন, ‘‘প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। ধান আর তোলা যাবে না। ভিজে মাঠে নামতে পারে চেন হার্ভেস্টর মেশিন। কিন্তু তা ভাড়া করার ক্ষমতা নেই।’’ জয়পুরের শ্যামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান মহাদেব কুণ্ডু নিজে আনাজ চাষ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বার তিলও একেবারে শেষ হয়ে গেল।"

বিষ্ণুপুরের হুলমারা গ্রামের সাত্তার চৌধুরী লাউ চাষ করেছিলেন। তিনি জানান, ‘লকডাউন’-এ দু'টাকা কেজি দরে লাউ বিক্রি হয়েছে। ক’দিন হল সেটা বাড়তে বাড়তে ১৫ টাকা হয়েছিল। বুধবারের ঝড়বৃষ্টি সব গাছ সব নষ্ট করে দিয়েছে। পাত্রসায়রের বেলুট গ্রামের কালো বাগদি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের বেতনও ধার করে দিতে হবে।’’

ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ বাঁকুড়ার খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সিমলাপাল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। খাতড়া মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা গণেশ সিং সর্দার জানান, বোরো ও গ্রীষ্মকালীন আনাজ মিলিয়ে খাতড়া, রানিবাঁধ, রাইপুর, সিমলাপাল, সারেঙ্গা, তালড্যাংরা, ইঁদপুর ও হিড়বাঁধে প্রায় ২২,৫৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সব মিলিয়ে ১২,২৭২ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বেশি ক্ষতি হয়েছে তিল চাষে। মহকুমায় এ বার ১৩,৭০০ হেক্টর জমিতে তিল ছিল। এর মধ্যে ৯,২০০ হেক্টর জমির তিল নষ্ট হয়েছে। তবে ক্ষতির সার্বিক খতিয়ান বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষি দফতরের হাতে আসেনি। বাঁকুড়ার উপকৃষি অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, “কালবৈশাখীতে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE