মগ্ন: পুতুল নিয়ে ঝালদার শিল্পী শঙ্কর সূত্রধর। নিজস্ব চিত্র
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে থমকে যাচ্ছে রথের চাকা। বসবে না রথের মেলা। খবরটা শোনা ইস্তক মনমরা শঙ্কর সূত্রধর। মেজাজ যেন বিগড়ে রয়েছে। পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের পঞ্চমুখী মোড়ের কাছে বাড়ি বছর চৌষট্টির ওই মৃৎশিল্পীর।
করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে এ বার পথে লামছে না ঝালদা শহরের রথ। রথ কমিটির মুখপাত্র শ্যামল কর্মকার বলেন, “করোনা-পরিস্থিতির কথা ভেবে রথ টানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। শঙ্করবাবুদের মতো শিল্পীদের কথা ভেবে খুব খারাপ লাগছে।”
ঝালদার রথের মেলায় মাটির পুতুল বিক্রি করেন শঙ্কর। এখন আর মাটির পুতুলের বিক্রি তেমন হয় না। তবুও প্রত্যেক বছর পুতুলের পসরা সাজিয়ে বসেন শঙ্করবাবুর মতো গুটিকয়েক শিল্পী। শঙ্করবাবুর আক্ষেপ, “পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই প্রতি বছর রথের মেলায় পুতুলের পসরা নিয়ে বসে যেতাম মেলায়।” এ বছর রথ টানা হবে না। এটা শোনার পরেই মনটা খারাপ হয়ে রয়েছে। মেলায় বিক্রির জন্য বানানো পুতুলের সারি দেখিয়ে শিল্পী বললেন, “কত ধরনের পুতুল বানিয়ে ছিলাম। সব বেকার হয়ে গেল।” তাঁর দুই নাতি প্রসেনজিৎ আর লক্ষ্মণ এখন পুতুল তৈরির কাজে দাদুকে সাহায্য করে। তাদের কথায়, “দাদু বলেছে এ বছর মেলায় যাবে না। মেলায় কত আনন্দ হয়। এ বার আর হবে না।”
মেলায় জিলিপি-পাঁপড় বিক্রি করেন ঝালদা শহরের কৈবর্ত্যপাড়া বাসিন্দা মথুর দত্ত। মেলা বন্ধের খবর শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “করোনার জন্য কাজ নেই। ভেবেছিলাম জিলিপি-পাঁপড় বিক্রি করে কিছু পয়সা আসবে। সেটাও হল না। ঘোষণা করা হয়েছে মেলা হবে না।” ঝালদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা বেলুন ও খেলনা বিক্রেতা হারাধন সূত্রধরের কথায়, “মেলায় বহু মানুষ আসেন। ভাল বেচাকেনা হয়। খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। জানি না, কত দিন এ ভাবে চলবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy