Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চতুর্থ শ্রেণির কর্মীই এখানে ডাক্তার! হতভম্ব ডিএম

বৃহস্পতিবার তালড্যাংরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে হোমিয়োপ্যাথির চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে স্বচক্ষে দেখলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চেয়ারে বসে রোগীদের ওষুধ দিচ্ছেন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিয়েই। 

স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তালড্যাংরা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসকের চেয়ারে বসে রোগী দেখছিলেন তিনি। তাঁকে ঘিরে ছিল রোগীদের জটলা। ঠিক সেই সময়েই হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়ে জেলাশাসক তাঁর কাছে জানতে চাইলেন, এখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী কে আছেন? রোগী দেখা ছেড়ে চেয়ারে বসা সেই ভদ্রলোক জবাব দিলেন, ‘‘আমিই চতূর্থ শ্রেণির কর্মী’’! উত্তর শুনে হতভম্ব অবস্থা। জেলাশাসক পরে বলেন, “আমি ভেবেছিলাম তিনি চিকিৎসক। রোগীদের ওষুধও দিচ্ছিলেন। তাই তাঁর কাছেই চতুর্থ শ্রেণিক কর্মীর খোঁজ করেছিলাম। কিন্তু, ভাবতেই পারিনি এমন জবাব পাব।’’

বৃহস্পতিবার তালড্যাংরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগে হোমিয়োপ্যাথির চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে স্বচক্ষে দেখলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চেয়ারে বসে রোগীদের ওষুধ দিচ্ছেন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিয়েই।

কয়েক বছর আগে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ডাক্তার সেজে এক দালালকে রোগী দেখতে দেখা গিয়েছিল। তা নিয়ে অভিযোগ ওঠার পরে হইচই পড়ে গিয়েছিল বাঁকুড়া মেডিক্যালে। এ বার চতুর্থ শ্রেণির কর্মীকে চিকিৎসকের ভূমিকায় দেখা গেল তালড্যাংরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। জেলাশাসক বলেন, “ঘটনাটি জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক প্রসূনকুমার দাস বলেন, “জেলাশাসক আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পুরো ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছি। তারপর যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।”

তালড্যাংরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্চনা কুণ্ডু বলেন, “হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসক ট্রেনিং-এ গিয়েছেন। হতে পারে রোগীর চাপেই ওই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ডাক্তারি শুরু করেন। ঘটনাটি জানতে পারার পরেই ওই কর্মীকে বহির্বিভাগ থেকে অন্তর্বিভাগে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।”

ঘটনা হল, এ দিন দুপুরে জেলাশাসক তালড্যাংরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে পাননি। প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক্স-রে এবং ইসিজি পরিষেবা চালু করা হয়নি। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে বলে নজরে এসেছে জেলাশাসকের। জেলা শাসক বলেন, “হাসপাতালে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ রয়েছে। সঠিক সময়ে এক্স-রে, ইসিজি চালু করা হয়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও সময়মতো অফিসে ছিলেন না। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ঘটনাগুলি জানানো হয়েছে।” অর্চনাদেবী বলেন, “আমি একটি সাব-সেন্টারে গিয়েছিলাম বলেই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেই সময় ছিলাম না। জেলাশাসকের নজরে যে সব সমস্যা উঠে এসেছে, সেগুলি নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

District Magistrate Inspection Health Care Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE