Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Eid 2020

খুশি যেন ফিকে বন্দিদশার ইদে

অন্য বছর ইদগাহে দেখা যায় বাড়ির ছোটদের বিভিন্ন পোশাকে নমাজ পড়তে নিয়ে যাচ্ছেন বড়রা। বসে বিভিন্ন খাবারের দোকান।

ঘরের মধ্যেই খেলা মুরারইয়ে। সোমবার। ছবি: তন্ময় দত্ত

ঘরের মধ্যেই খেলা মুরারইয়ে। সোমবার। ছবি: তন্ময় দত্ত

তন্ময় দত্ত
মুরারই শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০১:৫১
Share: Save:

ঘরে বসেই পড়তে হল নমাজ। ইদের শুভেচ্ছায় মেলানো হল না হাত। দেখা গেল না কোলাকুলি। পবিত্র ইদ যেন সকলের কাটল সাদামাটা অন্য দিনের মতন। লকডাউনের মধ্যে ইদের দিনে এমনই ছবি দেখা গেল মুরারই জুড়ে।

অন্য বছর ইদগাহে দেখা যায় বাড়ির ছোটদের বিভিন্ন পোশাকে নমাজ পড়তে নিয়ে যাচ্ছেন বড়রা। বসে বিভিন্ন খাবারের দোকান। বেলুন থেকে বাঁশি, খেলনা কিনে আনন্দে সকলে বাড়ি ফেরে। এ দিন রাস্তা ছিল ফাঁকা। দূর থেকে সকলে সালাম দেন বয়স্কদের। আত্মীয় ও প্রতিবেশীর বাড়িও যাওয়া হয়নি এ বার। এলাকাবাসীরা জানান, লকডাউনের ফলে রোজগারহীন সকলে। মধ্যবিত্ত থেকে গরিব বা বড়লোক সকলেই নমাজ বাড়িতে পড়েছেন। দোকান বাজার খোলা না থাকায় অনেকের নতুন জামা হয়নি। বাড়িতে আত্মীয় ও প্রতিবেশী আসবে না বলে লাচ্ছা, গাজরের হালুয়া তৈরি হয়েছে কম।

কাশিমনগর গ্রামের মফিজুল শেখ বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেক বছর ইদে জামা কাপড় সব নিয়ে অনেকটাই খরচ হয়। কিন্তু এ বার লকডাউনের ফলে অনেক দুঃস্থ পরিবার দুই বেলা ঠিকমতো খেতে পারছে না। তাই আমরা সেই পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। লকডাউন কবে উঠবে আর করোনাভাইরাস যেন পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় তাই দোয়া করেছি।’’

খুশির ইদে এ বার খুশি হতে পারেননি অনেকেই। পেশায় দিনমজুর রহিম আলী বলেন, ‘‘দু’মাস ধরে কোনও কাজ নেই। ঘরে বসে আছি। সংসার চালাতে পারছিনা। ঠিকমতো।’’ বলতে বলতে চোখ জলে ভরে যায় তাঁর। জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘‘পাঁচজনের কাছে দুই হাজার টাকা ধার দেওয়ার জন্য বললাম তারও দিতে পারলেন না। আমার কোনও দুঃখ নেই। তাঁদের হাতেও তো টাকা নেই। বাড়িতে সকালে নমাজ পড়েছি। পরের বছর ভাল করে ইদ কাটাব বলে আশা করছি।’’

ইদের মধ্যেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন অনেকেই। মুরারইয়ের বাসিন্দা আশরাফ আলি বলেন, ‘‘প্রশাসনের কথা শুনে বাড়িতে ইদের নমাজ পড়েছি। তবে মানুষজন যদি পারস্পরিক দূরত্ব বজায় না রেখে চলাফেরা করেন তাহলে সংক্রমণ বাড়তে পারে। ইদের আগে অনেক শ্রমিক ফিরেছেন। তাঁরা যেন সব নিয়ম মেনে বাড়িতে থাকেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের সাহায্য নিতে হবে। খুশির ইদের দিনে আমাদের সবাইকে একত্রিত হয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eid 2020 Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE