Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সব ভুলে হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা

চিকিৎসক, নার্সরাও প্রথম দিকে তরুণীর কাছ থেকে নাম-ঠিকানা বা পরিবার নিয়ে তেমন কিছু জানতে পারেননি। ইতিমধ্যে কিছু পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই তরুণী ৩২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এরপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

অসহায়: হাসপাতালের বেডে। বৃবস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: হাসপাতালের বেডে। বৃবস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০৬
Share: Save:

নাম পরিচয়হীন হয়ে প্রায় চোদ্দো দিন রামপুরহাট হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা এক তরুণী। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সক্রিয়তায় চিকিৎসা চলছে পুরোদমে। চলছে ঠিকানা জেনে পরিজনদের খোঁজও।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৯ ফেব্রুয়ারি রাতের রামপুরহাটে একা ওই তরুণীকে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। বহু চেষ্টা করেও অবাঙালি ওই তরুণীর কাছ থেকে তেমন তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। কিন্তু, সন্তান-সম্ভবা বুঝে ওই রাতেই তরুণীকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। চিকিৎসক, নার্সরাও প্রথম দিকে তরুণীর কাছ থেকে নাম-ঠিকানা বা পরিবার নিয়ে তেমন কিছু জানতে পারেননি। ইতিমধ্যে কিছু পরীক্ষা করে জানা যায়, ওই তরুণী ৩২ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এরপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, কিছুটা ধাতস্থ হয়ে দিন তিনেক আগে ওই তরুণী নিজের নাম জানায় ‘বৈষ্ণবী’। ঠিকানা বিহারের সমস্তিপুর। এ দিকে বাড়ি ফেরার ব্যাপারেও তরুণীর যথেষ্ট তাড়না আছে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তরুণীকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয়। কিন্তু, যথার্য ঠিকানা কিংবা নিজের বাবা-শ্বশুরের নাম বলতে না পারায় এখনও কোনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও নিকট জনের খোঁজ পাননি। তরুণীর কাউন্সেলিং চলছে। ঠিকানা খুঁজতে এক বেসরকারি সংস্থার সাহায্যও নিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট হাসপাতালের মহিলা বিভাগে চিকিৎসাধীন ওই তরুণী জানায়, বিহারের ইমলি স্টেশন সংলগ্ন সমস্তিপুর এলাকায় বাড়ি। বাবা ইন্দ্র মাহাতো। তিনি পেশায় স্টেশন ম্যানেজার। তরুণীর বাড়িতে বাবা, মা, দাদা, বৌদি আছেন। কিন্তু, কী ভাবে ওই তরুণীটি রামপুরহাট শহরে এলেন সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেননি। এ দিন বারবার আর্জি জানিয়েছে, ‘‘বাড়ি ফিরতে চাই।’’

হাসপাতালের সহকারী সুপার সুস্মিত ভট্টাচার্য জানান, ওই তরুণী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর দিন দশেক কোনও কথা বলতে পারেনি। পরে ইউএসজি পরীক্ষায় জানা যায় তিনি সন্তান-সম্ভবা। সুস্মিতবাবু বলেন, ‘‘দিন চারেক হল তরুণী কথা বলতে পারছেন। বাড়ি ফিরতে চান বলেও জানিয়েছেন। সবরকম চেষ্টা চলছে।’’ চিকিৎসক আনন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে মানসিক রোগগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ওই তরুণী। মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pregnant woman hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE