প্রতীকী ছবি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির মুখে খবরটা পাওয়ার পরেই নিশ্চিত হতে ফোন করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীকে। তাঁর কাছেও সুসংবাদ পাওয়ার পর থেকেই প্রিয়জনেদের ফেরার প্রতীক্ষায় শুরু হয়ে গিয়েছে প্রহর গোনার পালা। হাইকোর্টে খুনের মামলায় বেকসুর খালাস তিন জন কখন ফিরবেন নিজেদের বাড়িতে, নানুর থানার পাতিসড়া গ্রামে তাঁদের পরিবার এখন সেই পথ চেয়ে রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাতিসড়া গ্রামের একটি দিঘিতে প্রভাত মেটে নামে এক যুবকের মৃতদেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। তাঁকে খুনের দায়ে ২০১৬ বোলপুর আদালত ওই গ্রামেরই উত্তম ধীবর, দিলীপ ধীবর এবং জগবন্ধু মেটেকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়। তার পর থেকেই ওই তিন জন সাজা খাটছেন। সোমবার তাঁদের বেকসুর ঘোষণা করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই খবর পৌঁছনোর পর থেকেই তিন জনের বাড়িতে বইছে খুশির হাওয়া।
পাতিসড়া গ্রামে ঢোকার মুখেই পাশাপাশি বাড়ি দুই ভাই উত্তম আর দিলীপের। সেখান থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে মুখোমুখি বাড়ি জগবন্ধু মেটে এবং তাঁরই খুড়তুতো ভাই, নিহত প্রভাত মেটের। মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, ইস্তস্তত জটলার মধ্যে আলোচিত হচ্ছে ওই তিন জনের বেকসুর খালাস পাওয়ার বিষয়টি। কেউ কেউ বছর পাঁচেক আগে মৃতদেহ উদ্ধারের দিনটির কথাও স্মৃতিচারণ করছেন। নাবালক তিন নাতিকে নিয়ে বাড়ির দাওয়ায় বসেছিলেন উত্তম-দিলীপের বাবা শিবু ধীবর। বললেন, ‘‘দুই ছেলে জেলে যাওয়ার পর থেকে কী ভাবে যে এত দিন কেটেছে, তা শুধু আমরাই জানি।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যাদের জন্য ওদের এত দিন জেলে কাটাতে হল, তাদের কী হবে?’’
উত্তম ও দিলীপের মা পূর্ণিমা ধীবর কথা বলতে বলতেই তাড়াহুড়ো করছিলেন। ব্যস্ততার মধ্যেই বললেন, ‘‘বাড়ির বাকি ছেলেরা গিয়েছে উকিলের কাছে থেকে কাগজ আনতে। আমরা বর্ধমান সংশোধনাগারে ওদের খবর দিতে যাচ্ছি।’’ গ্রামেই দেখা মিলল জগবন্ধুর স্ত্রী পূর্ণিমা মেটের। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার দিন আমি মেয়ের সন্তান প্রসবের জন্য বর্ধমানের হাসপাতালে ছিলাম। ফিরে এসে শুনি পুলিশ স্বামীকে দরকার আছে বলে ডেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করেছে।’’ নিহত প্রভাতের বাড়িতে কেউ কোনও কথা বলতে চাননি। গ্রামবাসী জানান, প্রভাতের মৃত্যুর কয়েক মাস পরে শোকে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy