Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
ময়ূরেশ্বরের হটিনগর মোড়ের মণ্ডপে উঠে আসছে আস্ত গ্রাম

লোকশিল্পের থিমে বাজিমাতের চেষ্টা

ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অন্য বাড়িগুলির কোনওটির দাওয়ায় দেখা মিলবে বাউল, ভাদু, রাইবেঁশে, পট সহ বিভিন্ন লোকশিল্পীর। ছোট ছোট বক্সে শোনা যাবে ওই সব লোকগানও। দেখা মিলবে কুমোরের চাকা, কামারশালারও।

ঐতিহ্য: ময়ূরেশ্বরে খড়-বাঁশ, মাটিতে চলছে মণ্ডপের কাজ। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

ঐতিহ্য: ময়ূরেশ্বরে খড়-বাঁশ, মাটিতে চলছে মণ্ডপের কাজ। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি

অর্ঘ্য ঘোষ
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

হারিয়ে যাচ্ছে বাউল, বহুরূপীরা। হারাচ্ছে পটের গানও । জেন-ওয়াইয়ের সামনে সে সব তুলে ধরতে লুপ্তপ্রায় ওই লোকশিল্পকেই পুজোয় থিম করেছে ময়ূরেশ্বরের হটিনগর মোড় সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি।

এ বার ৩০ তম বর্ষে পা রাখল ওই দুর্গোৎসব। ইতিমধ্যেই ব্লকের সেরা পুজোগুলোর অন্যতম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে ওই দুর্গোৎসব। গত বছর স্বর্গদ্বার–নরকদ্বারের পাশাপাশি নির্মল বাংলা অভিযান, বাল্যবিবাহ এবং পণপ্রথা রোধের মতো সচেতনতামূলক থিম করে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের সেরা হিসাবে প্রশাসনের স্বীকৃতি পেয়েছিল ওই পুজো কমিটি। এ বারও সেরার শিরোপার লক্ষ্য তাদের। সেই লক্ষ্যে বেছে নিয়েছে লুপ্তপ্রায় লোকশিল্পের থিম।

কেমন সেই থিম?

উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পুজো মণ্ডপ হিসাবে একটা বড়ো এলাকা জুড়ে তৈরি করা হচ্ছে আস্ত একটি গ্রাম। সেই গ্রামের একটি বাড়িতে হবে দেবী আরাধনা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অন্য বাড়িগুলির কোনওটির দাওয়ায় দেখা মিলবে বাউল, ভাদু, রাইবেঁশে, পট সহ বিভিন্ন লোকশিল্পীর। ছোট ছোট বক্সে শোনা যাবে ওই সব লোকগানও। দেখা মিলবে কুমোরের চাকা, কামারশালারও।

এখন পুজো ঘিরে উদ্যোক্তাদের সাজো সাজো রব। দম ফেলার ফুরসত নেই শিল্পীদেরও। সহকারীদের নিয়ে আষাঢ় মাস থেকে মূর্তি-সহ ওই সব থিম গড়ছেন নদিয়ার তেহট্টের দিবানন্দ হাজরা। তিনি জানান, একটি প্রাচীন গ্রামে যা-যা দেখা যেত তা দেখা যাবে এই মণ্ডপে। একতারা বাজিয়ে বাউল কিংবা পটচিত্র দেখিয়ে পটুয়ার ভিক্ষা করা থেকে শুরু করে দেখা মিলবে রাইবেঁশে, বহুরূপী কিংবা ভাদুশিল্পীদের।

এখন থেকেই মণ্ডপ চত্বরে আট থেকে আশির ভিড় শুরু হয়ে গিয়েছে। শক্তিপদ রক্ষিত, আশিস মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘চোখের সামনে আস্ত একটি গ্রাম গড়ে উঠছে দেখে রোমাঞ্চ অনুভব করছি। আজকের দিনে এমন থিমের পরিকল্পনা সত্যিই প্রাসঙ্গিক। এই প্রজন্মের অধিকাংশেরই তো ওই সব লোকশিল্প সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। পুজোর সৌজন্যে কিছুটা হলেও সেই ধারণা তৈরি হবে।’’

খুশির অন্ত নেই কচিকাঁচাদেরও। পঞ্চম শ্রেণির অর্পণ পাল, ষষ্ঠ শ্রেণির পরিসা পালরা বলে, ‘‘আমরা তো সুযোগ পেলেই ঠাকুরতলায় চলে আসি। বসে বসে বইয়ের ছবিতে দেখা অনেক কিছু তৈরি হতে দেখি।’’ পুজো কমিটির সভাপতি গৌতম রক্ষিত এবং সম্পাদক তুফান মণ্ডল জানান, বর্তমান প্রজন্মের সামনে অবলুপ্তপ্রায় লোকশিল্পগুলিকে তুলে ধরতেই এই থিমের ভাবনা।

পঞ্চায়েতে সংবর্ধনা। শিক্ষক দিবস উপলক্ষে এলাকার ১০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, ১১ জন ফুটবলার এবং ব্লকের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক গোপাল চট্টোপাধ্যায়কে সংবর্ধনা জানাল নানুরের উচকরণ পঞ্চায়েত। ছিলেন নানুরের ওসি তপাই বিশ্বাস-সহ অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE