Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হনুমান, ছাড়া হবে জঙ্গলে

১৬ দিন পরে শহর-দাপানো হনমানকে শেষে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করলেন বনকর্মীরা।স্বস্তি ফিরল রামপুরহাটে।

বন্দি: ঘুমপাড়ানি গুলিতে বেহুঁশ হনুমানকে জালে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

বন্দি: ঘুমপাড়ানি গুলিতে বেহুঁশ হনুমানকে জালে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র

সব্যসাচী ইসলাম
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৬
Share: Save:

১৬ দিন পরে শহর-দাপানো হনমানকে শেষে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করলেন বনকর্মীরা।স্বস্তি ফিরল রামপুরহাটে।

নিয়মের ফাঁসে হনুমান ধরতে এত দিন ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করা যায়নি। বনকর্মীদের ভরসা ছিল জাল, বস্তা। কিন্তু বার বারই তাঁদের হাত ফস্কে পালাচ্ছিল প্রাণীটি। তার হামলায় জখম হন প্রায় জনাপঞ্চাশেক শহরবাসী।

শেষে কাটে জটিলতা। বুধবার বর্ধমান থেকে ঘুমপাড়ানি গুলি চালানোর বিশেষজ্ঞ দুই শিকারী পৌঁছন শহরে। বুধবার রাতে রামপুরহাট আদালত চত্বরে হনুমানটিকে দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর যায় বন দফতরের কাছে। এ দিন সকালে হনুমানটি পৌঁছয় গাঁধী ময়দানে। বনকর্মীদের দেখে স্টেডিয়াম থেকে নেমে আসে মাঠে। বন দফতরের কর্মীদের হাতের নাগালে এসে দাঁড়ায়।

এক বনকর্মীর কথায়, ‘‘ও ভেবেছিল অন্য দিনের মতো জান, বস্তা দিয়ে ধরার চেষ্টা হবে। অনায়াসে ও পালাতেও পারবে। কিন্তু ঘুমপাড়ানি গুলিও যে আমাদের সঙ্গে রয়েছে তা বুঝবে কী করে!’’ এর পরেই শিকারীর ঘুমপাড়ানি গুলি লাগে হনুমানের পেটে। ক্রমে নিস্তেজ হয়ে পড়ে হনুমানটি। ঘুমিয়েও পড়ে। জালে ঘিরে গাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তুম্বনি রেঞ্জ আফিসে। রেঞ্জ অফিসার সুষেণ কর্মকার জানান, চিকিৎসার পরে হনুমানটিকে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে।

এতে স্বস্তি ফিরেছে রামপুরহাটে। আদালতের আইনজীবী মহল থেকে সাধারণ মানুষ— খুশি সকলেই। পুরপ্রধান অশ্বিনী তেওয়ারি বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে আমার অফিস চত্বরেও ঢুকে পড়ত। মানুষ ভয় পেত, সেই ভয় এ বার কাটল।’’ সরকারি আইনজীবী সৈকত হাটি বলেন, ‘‘উৎকণ্ঠায় ছিলেন সকলেই, ফের না দামাল হনুমানের হাতে আক্রান্ত হতে হয়। সেটা কাটল।’’ পশুপ্রেমী নুরুল হক বলেন, ‘‘বনকর্মীদের সঙ্গে থেকে বার বার ওকে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলাম। হনমানটি জখম ছিল। আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। তার চিকিৎসার জন্যেই ঘুমপাড়ানি গুলি ব্যবহার করতে হয়েছে।’’

কয়েক দিন ধরে রামপুরহাট শহর দাপিয়েছে ওই হনুমান। আদালত চত্বরে, গাঁধী ময়দান, অলিগলি, শহরের পার্কে ঘুরত সে। আতঙ্কে ছিলেন শহরবাসী। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বনকর্মীরাও তার আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন। প্রতি দিন তার পিছনে তাড়া করে, জাল দিয়ে ধরার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতেন তাঁরা। তাকে ধরার জন্য মাছ ধরার জালও কেনা হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। বনকর্মীদের দেখলেই কার্যত তাঁদের দিতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তাঁদের কাছাকাছি ঘুরে বেড়াত সেটি। তার পরে সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে উঠে পড়ত কাছাকাছি উঁচু কোনও জায়গায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Monkey Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE