অনিল পরামাণিক।
জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ বৃদ্ধের দেহ। বন দফতর মনে করছে, তাঁকে আছড়ে মেরেছে দলছুট দাঁতাল। মৃত অনিল পরামাণিক (৬৫) বলরামপুর থানা এলাকার কর্মা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। শুক্রবার অযোধ্যা পাহাড়ের কলাবেড়া গ্রামের কাছে জঙ্গল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকার কর্মা গ্রাম পাহাড়ের নীচে। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য দিনের মতোই অনিল বৃহস্পতিবার পাহাড়ে গিয়েছিলেন ডালপালা কুড়িয়ে আনতে। সঙ্গে ছিলেন আনন্দ পরামাণিক নামে গ্রামেরই এক জন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দু’জনে কলাবেড়ার কাছে জঙ্গলে ছিলাম। আচমকা শব্দ শুনে বুঝি, হাতি ছুটে আসছে। তখন আর মাথার ঠিক ছিল না। ছুটতে শুরু করি।’’ কর্মা গ্রামের বাসিন্দা হিমাংশু পরামাণিক জানান, আনন্দই এসে খবর দেন, অনিল ছিলেন তাঁর সঙ্গে।
ওই দিন বিকেলেই গ্রাম থেকে খবর যায় বন দফতরে। সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় কেউই আর জঙ্গলমুখো হননি। শুক্রবার গ্রামের অদূরে জঙ্গল থেকে দেহ উদ্ধার করতে দুপুর গড়িয়ে যায়। গ্রামবাসী ও বনকর্মীরা জঙ্গলের কাছাকাছি গিয়েও ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কাছে গিয়েই বুঝতে পারি, দলছুট দাঁতালটা কাছাকাছি রয়েছে। চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল। তাই সাহস করে কেউই কাছাকাছি যেতে পারছিল না।’’ পরে বনকর্মী, বন সুরক্ষা কমিটির লোকজন ও পুলিশ মিলে জঙ্গল থেকে অনিলের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হাতির একটি দল বেশ কিছুদিন ধরে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে। ঘাটবেড়া গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ মাহাতো বলেন, দলটা মাহিলিটাঁড়, বেড়সা, কলাবেড়া, খুনটাঁড়-সহ আশপাশের গ্রামগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একা যে দাঁতালটা ঘুরছে, সেটাও রয়েছে। মাহিলিটাঁড়ের মঞ্জু হেমব্রম বলেন, ‘‘খুব আতঙ্কে আছি। মকর সংক্রান্তির আগের রাতে, ৯টা নাগাদ আমাদের উঠোনে ঢুকে পড়েছিল দলছুট দাঁতালটা। দ্রুত ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিই। কিছুক্ষণ ধরে ধানের পালুই ঘেঁটে শুঁড়ে করে কিছু ধান নিয়ে চলে যায়।’’
বলরামপুর রেঞ্জ আধিকারিক সুবিনয় পাণ্ডা জানান, দলছুট দাঁতালটি বেশ কিছু দিন ধরেই পাহাড়ে রয়েছে। পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় সেটিকে দেখা যায়। দাঁতালটি বয়স্ক। হাঁটাচলাও করে ধীরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy