Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মিছিল শেষে গোলমাল, জখম চার জন

বিজয় মিছিলের পরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিট, বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হল সদাইপুর থানা এলাকার তুরুকবড়িহাট। শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ওই ঘটনায় দু’পক্ষের চার জন জখম হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবদাদাতা
সদাইপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০১:১০
Share: Save:

বিজয় মিছিলের পরেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিট, বোমাবাজিতে উত্তপ্ত হল সদাইপুর থানা এলাকার তুরুকবড়িহাট। শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ওই ঘটনায় দু’পক্ষের চার জন জখম হয়েছেন। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি ১ ব্লকের ভূরকুনা অঞ্চলের মধ্যেই রয়েছে ওই গ্রামটি। এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলের দুটি বিবাদমান গোষ্ঠী রয়েছে। একটি ক্ষমতাসীন অন্যটি বিক্ষুব্ধ। পঞ্চায়েত মামলার রায়ের পর শুক্রবার রাত বারোটা পর্যন্ত ওই গ্রামে বিজয় মিছিল চলে। তার পরে গ্রামের একটি পুকুরে হাত-মুখ ধোয়ার সময় দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা ও পরে বোমাবাজি শুরু হয়। তাতেই জখম হন কয়েক জন।

তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও টিকিট না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ ছিল। বিক্ষুব্ধরা যাতে দলের বিরুদ্ধেই গোঁজ প্রার্থী না দেয়, সেটা আটকাতে আসরে নামেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, সিউড়ি ২ ব্লকের সভাপতি নুরুল ইসলাম। নেতাদের আশ্বাসে

তখনকার মতো নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এলেও চাপা অসন্তোষ ছিল। শুক্রবার রাতের সংঘাতের ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকের মত। যদিও প্রকাশ্যে একে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না বলতে চাইলেও আড়ালে সেটা মেনেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পক্ষে তৃণমূলের ভূরকুনা অঞ্চল সভপতি রত্নাকর মণ্ডল বলছেন, ‘‘ওই গ্রামে দুই সমাজবিরোধী এলাকা অশান্ত করে রেখেছে। আমাদের বিজয় মিছিল শেষ করার পরে গ্রামের পুকুরে স্নান করতে নামলে আচমকা বোমাবাজি করে ওরা। আবসার হোসেন নামে এক কর্মী জখম হন। প্রথমে সিউড়ি পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।’’ দুই সমাজবিরোধী এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, দাবি করেছেন সিউড়ি ১ ব্লক সভাপতি স্বর্ণময় সিংহও।

দলের ব্লক কমিটির সদস্য, দলের এক সময়ের এসটি-এসসি সেলের ব্লক সভাপতি উদয় হাজরা অবশ্য অন্যরকম দাবি করছেন। তিনি বলছেন, ‘‘যেটুকু জেনেছি, এক জনের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে ওই পক্ষের লোকেরাই। তাতে শেখ গরিব, সামু সহ চার জন জখম হয়েছেন।’’ উদয়ের দাবি, আদি তৃণমূল হওয়ার পরেও দলেরই একটি অংশের কাছে তাঁরা ব্রাত্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও টিকিট মেলেনি। সেটা জেলার উচ্চ নেতৃত্বকে জানানোয় অন্য পক্ষ চটে যায় বলেও উদয়ের দাবি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, উপলক্ষ পুকুরের জলে হাত-মুখ ধোয়া হলেও অশান্তি শুরু হওয়ার মূলে সেই ক্ষোভও থাকতে পারে। স্বর্ণময় সিংহ বলছেন, ‘‘নানা দুর্নীতির জন্য উদয়কে এক সময় দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার আবার কথা কীসের।’’ আর সিউড়ির বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘যে বা যারা বোমাবাজি করে, তারা দলের কেউ নয়। যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, পুলিশকে বলব আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Injury Brawl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE