বিষ্ণুপুরের যমুনাবাঁধ কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক স্কুলে কম পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী বিলি করার অভিযোগে প্রধানশিক্ষককে একটি ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মড়ার পঞ্চায়েতের যমুনাবাঁধ কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত বলেন, ‘‘অভিভাবকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কয়েকজন অভিভাবক চাল, আলু, মুসুর ডাল নিয়ে বাড়ি যান। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অভিযোগ, বাড়িতে গিয়ে ওজন করে দেখেন জিনিস পরিমাণে কম দেওয়া হয়েছে। জানাজানি হতেই এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা স্কুলে গিয়ে প্রথমে বচসা করেন, পরে প্রধানশিক্ষক বাসুদেব শিকারীকে স্কুলের একটি ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান।
খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ও অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ঈশিতা সেন স্কুলে হাজির হন। অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে খাদ্য সামগ্রী ফেরত এনে তাঁরা ওজন করান। নতুন করে খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও অভিভাবকেরা রাজি হননি বলে খবর। তাঁরা প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, প্রধানশিক্ষক তাঁদের কাছে মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি কম পরিমাণে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। তার পরে তাঁকে ঘর থেকে বাইরে বেরোতে দেওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পড়ুয়াপিছু দু’কেজি করে চাল ও আলু এবং ২৫০ গ্রাম মুসুর ডাল ও ৫০ মিলিলিটার ‘স্যানিটাইজ়ার’ দেওয়ার কথা। কিন্তু ওই স্কুলের অভিভাবকদের মধ্যে লিপিকা সেনগুপ্ত, মিনু দে, কল্যাণী রায়, পূর্ণিমা হাঁসদা, পূর্ণিমা সরেনদের অভিযোগ, ‘‘বুধবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হলেও কারও সন্দেহ হয়নি। ওজনও করা হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার পরেই বাড়িতে কয়েকজন ওজন করে দেখেন, সবই কম দেওয়া হয়েছে।’’
প্রধানশিক্ষক বাসুদেব শিকারীর দাবি, ‘‘স্কুলে আমি একা। সহকারী শিক্ষিকা কোয়রান্টিনে আছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা ওজন করেছেন। কয়েকটি প্যাকেটে ওজন কম আমার নজরে এসেছিল। ভাবছি, এর পরে সব কাজ নিজেই করব।’’
যদিও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সীমা অধিকারী, ছবি দে, রিনা দে প্রমুখ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের সামনে পাল্টা দাবি করেন, ‘‘ওজন করার কোনও ব্যবস্থা স্কুলে নেই। আন্দাজে মগে মেপে প্যাকেট করা হয়েছে।’’
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মন্তব্য করতে চাননি। বিডিও (বিষ্ণুপুর) বলেন, “স্কুলে চাল, ডাল, আলু কম দেওয়ার অভিযোগ পেয়েই সংশ্লিষ্ট অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে স্কুলে পাঠানো হয়। পুরো ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ়-সহ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। সেই সঙ্গে স্কুলের প্রধানশিক্ষককে ‘শো-কজ়’ করতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy