ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ নির্মূল করতে রাজ্যের অন্য চার জেলার সঙ্গে বীরভূমেও বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সে জন্য জেলায় ২৩-২৮ অগস্ট পর্যন্ত বিশেষ ‘গণঔষধ সেবন কর্মসূচি’ পালিত হতে চলেছে।
সোমবার সিউড়ি প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স হলে সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানান জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। তাঁরা জানান, এই মুহূর্তে বীরভূম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে ৩৪ লক্ষের বেশি মানুষকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। গতবার লক্ষ্যমাত্রার ৮২ শতাংশ মানুষকে ‘গণঔষধ সেবন কর্মসূচি’তে সামিল করা গিয়েছিল। এ বার আরও সাফল্যের সঙ্গে এই কর্মসূচি পালিত হবে বলে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের আশা।
এ দিন উপস্থিত ছিলেন বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি, রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন ওঝা, কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি সিএমওএইচ (২) শকুন্তলা সরকার প্রমুখ। স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, ‘‘বীরভূমে ফাইলেরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩২ হাজারের কিছু বেশি। কর্মসূচি সফল করা তাই খুবই জরুরি। গতবার দুটি পুরসভা এবং পাঁচটি ব্লকে কর্মসূচি সে ভাবে সফল হয়নি। এ বার স্বাস্থ্য দফতর, জেলা প্রশাসন, পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরের সমস্ত সদস্য, স্বাস্থ্যকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আশাকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য-সহ সমাজের সর্বস্তরের সহযোগিতার জন্য প্রচার শুরু হয়েছে।’’ উদ্দেশ্য যত বেশি সংখ্যক মানুষ এই কর্মসূচির আওতায় আসুন।
ফাইলেরিয়া রোগ কী? কী
ভাবে ছড়ায়?
জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, ফাইলেরিয়া বা গোদ মশাবাহিত একটি রোগ। হাত ফোলা, পা ফোলা, হাইড্রোসিল এই রোগের ফলেই হয়ে থাকে। কিউলেক্স মশা এই রোগটির জীবাণুর বাহক। তবে ধারক মানুষ। রোগের প্রকাশে মূল ভূমিকা থাকে এক প্রকার কৃমির। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, ফাইলেরিয়ায় দুই ধরনের ওষুধ (ডায়াথিল কারবামাজাইন বা ডিইসি এবং অ্যালবেন্ডাজোল) এক সঙ্গে খেলে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বাস করা পূর্ণবয়স্ক কৃমিগুলি অনেক ক্ষেত্রে মারা যায়। কিছু ক্ষেত্রে মারা না গেলেও দুর্বল হয়ে যায়।
দুই স্বাস্থ্য জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, ‘এমডিএ’ কর্মসূচির মাধ্যমে সকলে একই দিনে ওষুধ খেলে তবেই ওই এলাকা ফাইলেরিয়া রোগ ছড়ানো থেকে মুক্ত হবে। তবে দু’বছরের কম বয়সি শিশু, গর্ভবতী মহিলা সবাই ওষুধ খাবেন। দু’এক জনের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, গা-বমি, অ্যালার্জির মতো সাময়িক কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে সেটা সাময়িক। জেলাশাসক বলছেন, ‘‘এমন একটা রোগ নির্মূল করার জন্য সামান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যদি কারও হয়েও থাকে সহ্য করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy